চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃবর্তমানে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় বড় অংকের টাকার বিনিময়ে সান্ধ্যকালীন (ইভিনিং) শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা হয়ে আসছে। টাকার বিনিময়ে এই সান্ধ্যকালীন শিক্ষা কার্যক্রম ভালো লাগে না বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য মো. আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এখন দিনে সরকারি আর রাতে বেসরকারি চরিত্র ধারণ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সন্ধ্যায় মেলায় পরিণত হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
আবদুল হামিদ বলেন, আবার কিছু শিক্ষক নিয়মিত কোর্সের ব্যাপারে অনেকটা উদাসীন। কিন্তু ইভিনিং কোর্স, ডিপ্লোমা কোর্স, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়ার ব্যাপারে তারা খুবই সিরিয়াস। কারণ, এগুলোতে নগদ প্রাপ্তি থাকে।
সান্ধ্যকালীন শিক্ষা কার্যক্রমের অনিয়ম তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি শুনেছি, তাদের একটা বিষয় ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস। এতে তাদের ২২টা কোর্স। প্রতি কোর্সে সাড়ে ১০ হাজার টাকা। এতে দুই লাখ ৩০ হাজার টাকার ওপরে হয়। এর অর্ধেক শিক্ষকরা পান, আর অর্ধেক বিভাগ পায়। বিভাগের টাকা কী হয় জানি না, কিন্তু শিক্ষকরা পাচ্ছে। আমি এটাও জানি, যাদের শুধু পিএইচডি আছে, শুধু তারাই ক্লাস নেন।
এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে সান্ধ্যকালীন শিক্ষা কার্যক্রমের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, মনে রাখবেন, বিশ্ববিদ্যালয় চলে জনগণের টাকায়। সুতরাং, এর জবাবদিহিও জনগণের কাছে।
সম্প্রতি দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি বলেন, এসব অমানবিক ও অনভিপ্রেত ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার্থীদের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, লাশ হয়ে বা বহিষ্কৃত হয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য নয়। আমি আশা করব ভবিষ্যতে কর্তৃপক্ষ সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, তোমাদের মা-বাবা অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তোমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। এমন অনেক পরিবার আছেন যারা সর্বস্ব দিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের মানুষ করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান। তোমাদের মূল দায়িত্ব হলো লেখাপড়া করা এবং দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলা। তোমরা এমন কোনো কাজ করবে না যাতে তোমাদের পরিবার ও প্রতিষ্ঠানের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়।
এ সময় রাষ্ট্রপতি যেসব শিক্ষার্থী স্নাতকে ভূষিত হলেন এবং যারা গবেষকের স্বীকৃতি পেলেন তাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।