আন্তর্জাতিক ডেস্কঃমিয়ানমারের সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশটির শীর্ষ সামরিক নেতাদের ওপর এই সপ্তাহেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যাকে পর্যাপ্ত বলে মনে করছেন না জাতিসংঘের বিশেষ সহযোগী ইয়াঙ্গি লি।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালানোর প্রতিক্রিয়ায় ওয়াশিংটনের গৃহীত এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা আসে। মিয়ানমারের সামরিক কমান্ডার-ইন-চিফ মিন অং লায়েং ও অন্যান্য ৩ সিনিয়র কমান্ডার এবং তাদের পরিবারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে ওয়াশিংটন। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যা এখন পর্যন্ত নেয়া কোনো দেশের সবচেয়ে জোরাল পদক্ষেপ।
তবে জাতিসংঘের দূত লি ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞাকে যথেষ্ট বাস্তববাদী বলে বিবেচনা না করে কমান্ডারদের সম্পদ জব্ধ করার আহ্বান জানান। কুয়ালালামপুরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা তেমন কিছু নয় এবং এই পদক্ষেপকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। নিষেধাজ্ঞার মাত্রা আরও বাড়াতে হবে। তারা এমনিতেও কখনোই যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করতে যাচ্ছিল না … আসুন বাস্তববাদী হই।
লি বলেন, সেনাপ্রধান মিন অং লায়েং, তার ডেপুটি সোয়ে উইন এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থান ওও এবং অং অং-এর সঙ্গে আরও দুজন সামরিক নেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত। ২০১৮ সালে মিয়ানমারে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনে দেশটির মোট ৬ জেনারেলকে গণহত্যার অভিযোগে জড়িত থাকার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছিল। নিষেধাজ্ঞা প্রসারিত করে ৬ জনকেই আওতায় আনা উচিত।
লি সাম্প্রতিক সপ্তাহে প্রকাশিত মিয়ানমারের রিপোর্টে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত নির্যাতন এবং বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অভিযান আরও খারাপ হতে পারে বলে জানায়। মিয়ানমারের রাখাইন ও চিন রাজ্যে মোবাইল ব্ল্যাকআউটের মাধ্যমে বিস্তৃতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে বলে লি গতমাসে অভিযোগ জানায়।
মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের মাধ্যমে বন্যার্ত মানুষের জন্য ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনাও হুমকির সম্মুখীন হয়েছে বলে তার অভিযোগ। এমনকি, এর ফলে স্থানীয়রা দুর্যোগের পূর্বপ্রস্তুতিও নিতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন হচ্ছে, মিয়ানমার সরকার কি রাখাইন জনগণের আরও বেশি ক্ষতিসাধন করতেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে?’
২০১৭ সালে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী দেশটির সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম নির্যাতন, গণহত্যা অভিযান চালায়। প্রাণ রক্ষার্থে সেসময়ে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ জানায়, সামরিক অভিযানের মধ্যে গ্রামবাসীদের গণহত্যা, গণধর্ষণ, লুটতরাজ এবং মৃত্যুদণ্ড ছিল যাকে ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ বলা যায়। মিয়ানমার সরকার বরাবর এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। রয়টার্স