লক্ষ্য শতরানের নীচে। কিন্তু তা করতেও শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করতে হল বাংলাদেশকে। নিয়মিত উইকেট হারানোর সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপেই পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তারপরও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে শেষ হাসি হেসে সিরিজ নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা।
এদিন সিরিজ নিশ্চিতের ম্যাচেও সুযোগ লুফে নিতে ব্যর্থ লিটন দাস। আগ্রাসী শটে পাওয়ার প্লে’র আগেই প্যাভিলিয়নে দুই অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। দ্রত ৩ উইকেট হারালেও ধাক্কা সামাল দিলেন নাইম শেখ-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জুটি।
১৫তম ওভারে নাইম আউট হলেও আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। এক ম্যাচ হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়ার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল মাহমুদউল্লাহবাহিনী।৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের।
স্কোরবোর্ডে ৮ রান তুলতেই ব্যক্তিগত ৬ রানে কোল ম্যাকনকির বলে ফিন অ্যালেনকে ক্যাচ দিয়ে বসেন লিটন। এরপর ক্রিজে নেমে নাঈমের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সাকিব। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে এজাজ প্যাটেলকে সামনে এগিয়ে মারতে গিয়ে স্টাম্পিং হন সাকিব।
৮ বলে করেন ৮ রান। এর ৩ বল পরই এই স্পিনারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন মুশফিক। ০ রানে বিদায় নেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। ৩ উইকেট হারালেও না ওপেনার নাইম শেখকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মাহমুদউল্লাহ।
নিউজিল্যান্ডের স্পিনারদের দেখে শুনে ভালোই সামাল দেন দুজন। তবে ১৫তম ওভারে ৩৫ বলে ২৯ রানে ফেরেন তিনি। এরপর আফিফ নামলেও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে স্বাগতিকদের চাপে ফেলে দেয় নিউজিল্যান্ড। শেষ ১৮ বলে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন হয় ১৮ রানের।
সেই ওভারে আসে গুরুত্বপূর্ণ ৭ রান। কিন্তু ১৯তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দিকে নিয়ে নেয় বাংলাদেশ। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকায়নি টাইগাররা। ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৬ উইকেটে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন আফিফ।
এর আগেসিরিজ জিততে মাঠে নামা বাংলাদেশের পক্ষে যায়নি টস ভাগ্য। গত ম্যাচের মতো এদিনও টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিতে সময় নেননি টম ল্যাথাম। তবে কিউই অধিনায়কের এই সিদ্ধান্তের প্রতিদান নিতে পারেননি রাচিন রবিন্দ্র।
প্রথম ওভারের ৪ বল ডট যাওয়ার পয় পঞ্চম বলে নাসুম আহমেদকে সুইপ করতে গিয়ে মিড উইকেটে সাইফউদ্দিনের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তার বিদায়ে ক্রিজে আসেন ল্যাথাম। উইকেট হারালেও অপরপ্রান্তে থাকা ফিন অ্যালেন আক্রমণাত্মক মনোভাবে খেলে স্কোরবোর্ডে রান যোগ করতে থাকেন।
রিভার্স সুইপে ছক্কা হাঁকিয়ে সাকিবের ওভারে নেন ১০ রান। কিন্তু পরের ওভারে একই শট খেলতে গিয়ে সাইফউদ্দিনের হাতে ধরা পড়েন এই ওপেনারও। এরপর উইল ইয়াং এবং ল্যাথামের ব্যাটে পাওয়ার প্লে শেষে কিউইদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ২২ রান।
পাওয়ার প্লে শেষেও নিয়ন্ত্রিত বোলিং চালিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে ১০ ওভার পর্যন্ত ৫’র ওপর রান রেটে উঠেনি নিউজিল্যান্ডের। এরপর ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে শেখ মেহেদির ফ্লাইটেড ডিলেভারিকে এগিয়ে এসে সিঙ্গেল নিতে গিয়ে স্টাম্পিং হন ল্যাথাম। ২৬ বলে ২১ রান করে ফেরেন তিনি।
পরের ওভারে নাসুমের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হন নিকোলস। এরপরের বলেই গ্র্যান্ডহোমকেও প্যাভিলিয়নের পথ দেখান বাঁহাতি এই স্পিনার। তবে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করা নাসুম শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও ব্লান্ডেলকে ফেরাতে পারেননি।
১৬তম ওভারে এসে অবশ্য এই ব্যাটসম্যানকে ৪ রানে বিদায় করেন মুস্তাফিজুর রহমান। এর ৩ বল পরই কোল ম্যাককনকিকে অসাধারণ এক ক্যাচে কট অ্যান্ড বোল্ড করেন তিনি।
১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে দারুণ এক ইয়র্কারে এজাজ প্যাটেলকে ফেরান সাইফউদ্দিন। ১৯ ওভার শেষে কিউইদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৮ উইকেটে ৯২ রান। শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে ৪৮ বলে ৪৬ রান করা ইয়াংকে ফেরান মুস্তাফিজ। এরপরের বলে টিকনারকেও বিদায় করেন তিনি। ১৯.৩ ওভারে নিউজিল্যান্ড থামে ৯৩ রানে।
নিউজিল্যান্ড: ৯৩ অল আউট (ইয়াং ৪৬) (নাসুম ১০/৪, মুস্তাফিজ ৪/১২)
বাংলাদেশ: ৯৪/৪(১৯.২ ওভার) (নাইম ২৯, মাহমুদউল্লাহ ৩৯*) (প্যাটেল ২/৯)