বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের ওপর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিকেল সাড়ে তিনটায় তিনি সভায় যোগ দেন। তার সভাপতিত্বেই এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সভায় দলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও বুদ্ধিজীবীরা বক্তব্য রাখবেন। সভা পরিচালনা করছেন আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করতে দেয়নি তখনকার পাকিস্তান সরকার। আজ সেই ভাষণ অমূল্য বিশ্বসম্পদ ও ঐতিহ্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে তা সংরক্ষণ করার এবং বিশ্বকে জানানোর দায়িত্ব নিয়েছে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেসকো)।
১৯৭১ সালের অগ্নিঝরা মার্চের ৭ তারিখ বঙ্গবন্ধুর সেই মহাকাব্যিক দৃপ্ত উচ্চারণ আগে থেকে লেখা ছিল না। এমনকি কোনো নোটও ছিল না। বরং তা ছিল মুক্তিকামী বাঙালির প্রতি বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনামূলক এক তাৎক্ষণিক ভাষণ। ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, ‘মনে রাখবা- রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব; এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লা’।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের স্মৃতি-বিজড়িত ৭ মার্চ উপলক্ষে দেশব্যাপী ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বাঙালি জাতির ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা একটি অবিস্মরণীয় দিন। এই দিনে তৎকালীন ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক উত্তাল জনসমুদ্রে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ডাক দেন।
এই ঐতিহাসিক ভাষণের মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আন্দোলনরত নিরস্ত্র বাঙালি জাতিকে মুক্তির মহান মন্ত্রে উজ্জীবিত করে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামকে জনযুদ্ধে পরিণত করেন।
১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানের সামরিক শাসকগোষ্ঠী বিজয়ী আওয়ামী লীগ তথা বাঙালিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে। প্রকৃতপক্ষে তাদের উদ্দেশ্য ছিল, যেকোনোভাবে পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা।
এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন আহ্বান করেন। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে ১ মার্চ এ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতবি ঘোষণা করা হয়। প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২ ও ৩ মার্চ সারা দেশে হরতাল পালন করে।
এই পটভূমিতে ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে অসীম সাহসিকতায় তার বলিষ্ঠ কণ্ঠে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। বঙ্গবন্ধুর দেয়া ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণটি বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্য বহন করে এবং বাঙালি জাতির অনুপ্রেরণার অনির্বান শিখা হয়ে অফুরন্ত শক্তি ও সাহস যুগিয়ে আসছে।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।