চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃইসলামী বিশ্ববিদ্যায়ে (ইবি) ছাত্রলীগের দুই গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আনিসুর রহমানসহ উভয় গ্র“পের ২০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তার কর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পদবঞ্চিত গ্র“পের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এ সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব তাদের নেতা-কর্মী ও বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের থানা গেট এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে সড়ক হয়ে প্রধান ফটকের দিকে এগোতে থাকে। এ সময় ক্যাম্পাসে অবস্থান করা পদবঞ্চিত গ্র“পের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে ফটকে এলে উভয় গ্র“পের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।সংঘর্ষে উভয় গ্র“পের নেতা-কর্মীদের হাতে লাঠি, হকিস্টিকসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা যায়। এ সময় নেতা-কর্মীরা তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করে। দুই গ্র“পের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় প্রধান ফটক এলাকা। সভাপতি ও সম্পাদকসহ উভয় গ্র“পের ২০ জন নেতাকর্মী আহত হয়। তাদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা গুরুতর। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কয়েকজনকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষে পদবঞ্চিতদের নেতা-কর্মীদের সামনে টিকতে না পেরে পালিয়ে যায় সভাপতি-সম্পাদক গ্র“পের নেতা-কর্মীরা। পরে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ফলে ক্যাম্পাস থেকে দুপুরের শিডিউলের কোনো বাস ছেড়ে যেতে পারেনি। সেইসঙ্গে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে নেতা-কর্মীরা। পরে বেলা আড়াইটায় অবরোধ তুলে নিলেও ফটক অবরোধ করে রাখে নেতা-কর্মীরা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বিকেল সাড়ে ৪টা) পদবঞ্চিতরা ক্যাম্পাসের ফটক আটকে রেখে অবস্থান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষের ঘটনায় বেলা সাড়ে চারটায় সম্পাদক রাকিবকে গ্রেফতার করে কুষ্টিয়া থানা পুলিশ। পুলিশ সুপার তানভীর আরাফাত এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঘটনা তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়।
এর আগে সভাপতি-সম্পাদকের ক্যাম্পাসে আসার সংবাদ পেয়ে সকাল থেকে দলীয় টেন্টে অবস্থান নেয় পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা। অন্যদিকে নেতাদের গ্রহণ করতে ও নিরাপত্তা দিতে প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় কয়েকজন নেতা-কর্মী। বেলা ১১টার দিকে পদবঞ্চিত গ্র“প মিছিল নিয়ে প্রধান ফটকে গিয়ে সভাপতি-সম্পাদক গ্র“পের নেতা-কর্মীদের মারধর করে। এতে তিনজন আহত হয় ও বাকিরা পালিয়ে যায়।
এরপর পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক প্রায় ২০ মিনিট অবরোধ করে রাখেন। পরে তাঁরা অবরোধ তুলে নিয়ে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। ক্যাম্পাস থেকে দুপুর দুইটার পর কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।
গত ১৪ এপ্রিল পলাশ-রাকিবকে সভাপতি সম্পাদক করে কমিটি দেয় কেন্দ্র। দেড় মাস না যেতেই ৪০ লাখ টাকায় কমিটিতে আসা নিয়ে সম্পাদক রাকিবের অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। এরপর টাকা দিয়ে কমিটিতে আসাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ক্যাম্পাসে সভাপতি ও সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে পদবঞ্চিত গ্র“প। এরপর বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে এলে কর্মীদের ধাওয়ায় চার দফায় ক্যাম্পাস ছাড়ে সম্পাদক রাকিব।