ইসলামাবাদ হাইকোর্ট কর্তৃক পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআইপ্রধান ইমরান খানের সাজা স্থগিতের ঘটনায় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট ও প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়ালের সমালোচনা করেছেন সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরানের সাজা স্থগিত করে বহুল প্রত্যাশিত রায় দেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আমির ফারুখ ও বিচারপতি তারিক মেহমুদ জাহাঙ্গিরির সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। হাইকোর্টের এই রায় পিটিআইয়ের জন্য বড় ধরেনর আইনি বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ রায়ের আগে গত ২৩ আগস্ট পৃথক আরেক শুনানিতে পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি (সিজেপি) উমর আতা বন্দিয়াল বলেছিলেন, তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করে রায় দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত।
ইমরান খানের সাজা স্থগিতের রায়ের পর এক এক্সবার্তায় (সাবেক টুইটার) শাহবাজ শরিফ বলেন, পিটিআইপ্রধানের প্রতি সুপ্রিম কোর্টের যে ‘পক্ষপাতিত্ব’ সেটা দ্বারা ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রভাবিত হয়েছে। ইমরানের বিরুদ্ধে সাজা স্থগিত হয়েছে, বাতিল নয়।
তিনি আরও বলেন, বিচার ব্যবস্থার এই ভূমিকা ইতিহাসে কালো অধ্যায় হিসেবে লিখিত থাকবে। বিচারের দাঁড়িপাল্লা একদিকে ঝুঁকছে। যে বিচার ব্যবস্থা ন্যায়বিচার ক্ষুণ্ন করে, তা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
পিএমএল-এন জোটের এই নেতা আরও বলেন, যারা রাষ্ট্রীয় উপহারসামগ্রী বেচে দেয়, তাদের কাছে আইন অসহায়। চোর ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসীদের সহায়তা করা হলে দেশে সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার কোথায় পাবে?
তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বর্তমানে অ্যাটক কারাগারে বন্দি আছেন ইমরান খান। তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় তার সাজা স্থগিত হলেও অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মামলার শুনানির জন্য প্রতিষ্ঠিত বিশেষ আদালত তাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রাখতে কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। গোপন তারবার্তার মামলায় আগামীকাল বুধবার (৩০ আগস্ট) তাকে আদালতে হাজির করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সাইফার বা তারবার্তায় একটি কূটনৈতিক নথি ছিল। ইমরান খানের দাবি, তিনি এই তারবার্তাটি হারিয়ে ফেলেছেন। পিটিআইয়ের অভিযোগ, ওই তারবার্তায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সহায়তায় ইমরান খানকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি সম্মিলিত বার্তা ছিল। এই একই মামলায় পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশির বিরুদ্ধেও বিচারকাজ চলছে।
সরকার থেকে বিদায় নেওয়ার পর থেকে একের পর এক আইনি জটিলতায় পড়ছেন ইমরান খান। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ১৫০টির বেশি মামলা রয়েছে। এমনকি বেশ কয়েকটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।