চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ডসের কুদস বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানি ও হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছিল ইসরাইলি বিমান। ২০০৬ সালের দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধের সময় বৈরুতে এমন ঘটনা ঘটেছিল।ইরানি টেলিভিশনকে দেয়া নিজের প্রথম সাক্ষাৎকারে তিনি এমন দাবি করেন। বৈরুত থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের তদারকির দায়িত্ব ছিল তার।-খবর টাইমস অব ইসরাইল ও এএফপির
১৩ বছর আগের ওই প্রাণঘাতী লড়াইয়ে তিনি দৈনিক ভিত্তিতে তেহরানকে প্রতিবেদন দিতেন এবং খামেনির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন।
৩৪ দিনের ওই যুদ্ধের পুরোটা সময় তিনি লেবাননে ছিলেন। ইমাদ মুগিয়ার সঙ্গে সিরিয়া থেকে লেবাননে প্রবেশ করেন তিনি। ইরান-সমর্থিত শিয়া আন্দোলন হিজবুল্লাহর কমান্ডার ইমাদ মুগিয়া ২০০৮ সালে গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন। ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ও সিআইয়ের অভিযানে তিনি নিহত হন।
বৈরুতের পার্শ্ববর্তী দাহিয়া গ্রামের ওপর দিয়ে ইসরাইলি গোয়েন্দা বিমান অবিরত উড়ে যাচ্ছিল। গ্রামটিকে হিজবুল্লাহর ঘাঁটি বলা হয়ে থাকে।
অঞ্চলটির মূলকেন্দ্রে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে হিজবুল্লাহর একটি কক্ষ ছিল। সেখান থেকে প্রতিটি মুহূর্তে ইসরাইলিদের পর্যবেক্ষণ করা হতো।
সোলাইমিন বলেন, কোনো একটি শেষ রাতে তিনি এবং মুগিয়া অনুভব করেন, অভিযান কক্ষ থেকে নাসরুল্লাহকে সরিয়ে দেয়া দরকার।
দ্বিতীয় একটি ভবনে নাসরুল্লাহকে সরিয়ে নেয়ার পর তারাও সেখানে যান। কাছেই দুটি ইসরাইলি বোমা বিস্ফোরিত হয়।
সোলাইমানি বলেন, আমরা অনুভব করতে লাগলাম, দুটি বিস্ফোরণের পর তৃতীয় আরেকটি আসছে। কাজেই সেই ভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা। আমাদের কাছে কোনো গাড়ি ছিল না। চারদিকে সুনসান নীরবতা। কেবল ইসরাইলি বিমান দানিয়া গ্রামের আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছিল।
তিনি এবং নাসরুল্লাহ একটি ড্রোন থেকে গাছের আড়ালে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তখন তারা একটি গাড়ির খোঁজে মুগিয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু সেই গাড়িটিও শনাক্ত করে ফেলে ড্রোন। কাজেই গাড়িটি শাঁ করে ঘুরিয়ে তারা একটি ভূগর্ভস্থ গ্যারেজে আশ্রয় নেন।
নাসরুল্লাহকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দেয়ার পর তিনি এবং মুগিয়া ফের কমান্ড সেন্টারে ফিরে যান।
ইসরাইলি চ্যানেল ১৩-এর এক বিশ্লেষক বলেন, পশ্চিমাদের কাছে কোনো আত্মসমর্পণ নয়, মুসলিম বিশ্বে এমন বাণী পৌঁছাতেই তিনি এই সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। দেশের বাইরে ইরানি তৎপরতার দায়িত্ব কাসেম সোলাইমানির কাঁধে।
দ্বিতীয় লেবানন যুদ্ধে এক হাজার ২০০ লেবানিজ নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এ ছাড়া ইসরাইলির ১৬০ সেনা নিহত হয়েছেন।