খালিশপুর জুট ওয়ার্কার্স ইনস্টিটিউটের মডেল শপিং কমপ্লেক্সের ৩০টি দোকান ঈদের মাত্র ১২ দিন আগে পাটকল শ্রমিক নেতাদের নেতৃত্বে জোরপূর্বক বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনা প্রেসক্লাবে মডেল শপিং কমপ্লেক্সের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম পলাশ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, খুলনা নগরীর খালিশপুর জুট ওয়ার্কার্স ইনস্টিটিউটের মডেল শপিং কমপ্লেক্সের ব্যবসায়ী তারা। এ কমপ্লেক্সে বিভিন্ন ধরণের ৩০টি দোকান রয়েছে তাদের। দীর্ঘ দিন ধরে তারা দোকান ঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা বাণিজ্য পরিচালনা করে আসছে। গত ২০১৯ সালের ২ জুলাই বিজেএমসি সব জুট মিল বন্ধ করে দেয়। এরপর পাটকল শ্রমিক সংগঠন দ্বারা পরিচালিত খালিশপুর জুট ওয়ার্কার্স ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় কতিপয় ব্যক্তি এসে দোকান ঘরের জামানত ও ভাড়া অতিরিক্ত দাবি করে এবং বিরক্ত করতে থাকে। এতে বাধ্য হয়ে তারা জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করেন। উল্লেখ্য, অত্র মার্কেট সংলগ্ন জায়গাটি খুলনা জেলা প্রশাসকের ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত জমি হিসেবে ১৯৬২ সালের রেকর্ড রয়েছে। অত্র সংগঠনের নামে মার্কেটের জমি বরাদ্দ বা মালিকানা দেয়নি। তারপরও শান্তিতে ব্যবসা করার স্বার্থে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ছুটাছুটি করলেও সমস্যার সমাধান হয়নি। অবশেষে গত ২০২১ সালের ৯ জুন খুলনা জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। যার মিস কেস নং-৩০/২০২১। ওই মামলায় শুনানী শেষে আদালতে নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের ভাড়ার টাকা প্রতি মাসে আদালতে জমা দিয়ে আসছেন।
সম্মেলনে আরো উল্লেখ করা হয়, খালিশপুরের মিলগুলো বন্ধের পর ওই এলাকার ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কারণ এলাকার হাজার হাজার শ্রমিক গ্রামের বাড়ি চলে গেছে। খালিশপুর অনেকটা ফাঁকা ফাঁকা অবস্থা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীদের কেনাকাটা নেই বললেই চলে। এছাড়া করোনা গত দু’ বছরে ব্যবসায়ীদের পঙ্গু করে ফেলেছে। সব মিলিয়ে আসন্ন ঈদে ব্যবসায়ীরা বেচাবিক্রি করে লাভের মুখ দেখবে বলে স্বপ্ন দেখে। সে মুহূর্তে মরার ওপর খাড়ার ঘা’র মত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তাদের। গত ২০ এপ্রিল দিবাগত রাত ২টার দিকে শ্রমিক নেতা মুরাদ হোসেন ও হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একদল শ্রমিক নেতা তাদের মডেল শপিং কমপ্লেক্সের গেট তালা দিয়ে দেয়। এমন কি তালা যাতে না খুলতে পারে এ জন্য সিলগালা করা হয়। অনেক দপ্তরে এ ব্যাপারে ছুটাছুটি করলেও তালা খোলার কোন ব্যবস্থা হয়নি। এতে করে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, আসন্ন ঈদ উপলক্ষে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে ঈদের আগে মালামাল দোকান ভর্তি করেন। কিস্তু ওই মালামাল বিক্রি করতে না পারলে তারা ঋণ পরিশোধ করতে পারবে না। পথে বসতে হবে। ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। মার্কেটের এ অবস্থায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শিগগিরই মার্কেটটি খুলে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, জেলা প্রশাসক, পুলিশ কমিশনারসহ সংশ্লিষ্টদের নিকট জোর দাবি জানান ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কমপ্লেক্সের সাঃ সম্পাদক ডাঃ মোঃ নজরুল ইসলাম সজল, আতিয়ার শেখ, মোঃ শাহিন সরদার, নুরুল ইসলাম, মোস্তাক আহমেদ, তৌহিদুল ইসলাম, হাজী শহিদ, শরিফুল ইসলাম, নিয়াজ, নুরুল প্রমুখ।