মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি :: জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) আতঙ্কে ভারত থেকে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে মানুষ। গত দুই সপ্তাহে কমপক্ষে দুই শতাধিক ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীকে আটক
করেছেন খালিশপুরস্থ ৫৮ বিজিবি।
বিজিবি বলছে, যারা অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এদের মধ্যে বেশির ভাগই মুসলমান। এরা এনআরসি আতঙ্ক ও স্থানীয় নির্যাতনে দেশ ছেড়ে চলে আসছেন। তারা আর ভারতে যাবেন না বলে বিজিবির কাছে জানিয়েছেন। সহায়-সম্বল নিয়ে তারা এদেশে চলে এসেছেন। তাদের আটকের পর অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, মহেশপুর উপজেলার জলুলী, পলিয়ানপুর, খোষালপুর সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে বাঙালিরা। গত ১৫ দিনে ৭৫ নারী, ৬৪ পুরুষ ও ৬৪ জন শিশুকে তারা আটক করেছেন।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আটক করেছেন চারজনকে। এছাড়া চলতি নভেম্বরের ১৫ দিনে শুধুমাত্র মহেশপুর
থানার মাধ্যমে ১৫৭ জন অনুপবেশকারীকে আদালতে পাঠিয়েছে। এর মধ্যে চলতি মাসের ১৩ নভেম্বর ৩৩ জন ও
১৪ নভেম্বর ৪৯ জনসহ মোট ৮২ জনকে আটক করেছে বিজিবি। এটাই বিজিবির হাতে আটক হওয়া বড়
সংখ্যার অনুপ্রবেশকারী দল।
বিজিবি ৫৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল কামরুল আহসান বলেন, মাইগ্রেশন করে যারা ভারতে
গিয়েছিলেন তাদের সেখানে বসবাসে অসুবিধা হচ্ছে। নানাভাবে তারা চাপের মধ্যে পড়েছেন। বিশেষ
করে ব্যাঙ্গালুর এলাকায় এই সমস্যা বেশি হচ্ছে। যে কারণে তারা ভারত ছেড়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা
করছেন। তারা এক সময় বাংলাদেশে ছিলেন বলে দাবি করছেন। তারা বেশিরভাগ দুর্গম এলাকার ঠিকানা
দিচ্ছেন। যে কারণে বিজিবি যাচাই করতে পারছে না। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা
হয়েছে। আপাতত আটকদের অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অবশ্য স্থানীয়রা বলছেন, বিজিবি যে কয়েকজনকে আটক করেছে অনুপ্রবেশকারী তার চেয়ে কয়েকগুণ
বেশি। তারা বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে এদেশে প্রবেশ করেছে।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে বিজিবি কর্মকর্তা কামরুল আহসান বলেন, বিজিবি এব্যাপারে কঠোর নজরদারি করছেন। সে ক্ষেত্রে চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রবেশের সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে মহেশপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল আলম বলেন, যারা আটক হচ্ছে তাদের
পরিচয় নিয়ে দেখা যাচ্ছে তারা বেশির ভাগ বাগেরহাট ও খুলনা এলাকার। তারা দুই দশক ধরে ভারতে গিয়ে
কাজ করছিলেন। সেখানে স্থানীয় ঝামেলায় চলে আসছেন। তাদের বাংলাদেশে আত্মীয়-স্বজন রয়েছে।