অনলাইন ডেস্কঃখুলনার ত্রাস এরশাদ শিকদারের সহযোগী ও ১২ মামলার রাজসাক্ষী মো. নুর আলম শিগগিরই কারামুক্ত হচ্ছেন।সোমবার ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান অন্য কোনো মামলা না থাকলে নুর আলমকে কারাগার থেকে মুক্তির আদেশ দেন।নুর আলম চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ থানার আজিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে কারাগারে আছেন।
১২টি হত্যাকাণ্ডে এরশাদ শিকদারের সহযোগী ছিলেন তার দেহরক্ষী নুর আলম। পরে তিনি এসব হত্যা মামলার রাজসাক্ষী হন এবং আদালতে এরশাদ শিকদারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন। তার সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে খুলনার জলিল টাওয়ারের মালিকের ম্যানেজার খালিদ হত্যা মামলায় এরশাদ শিকদারের ফাঁসির আদেশ হয়। ওই মামলায় ২০০৪ সালের ১০ এপ্রিল মধ্যরাতে খুলনা জেলা কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর হয়। এভাবে একে একে ১১টি মামলায় রাজসাক্ষী হিসেবে কারাগারে থেকেই এরশাদ শিকদারের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন নুর আলম। বাকি ছিল রাজধানীর লালবাগের আজিজকে অপহরণ করে হত্যার মামলার সাক্ষ্য। পুরাতন মামলা হিসেবে গত বছর ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট মামলাটি চার মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দেন। ওই আদেশ গত ৩ জুলাই মুক্তির আদেশ দেয়া আদালতে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জুলাই নুর আলমকে খুলনা কারাগার থেকে হাজির করে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
সোমবার মামলাটির ধার্যকৃত তারিখে ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিস থেকে আইনজীবী মুনতাছির মাহমুদ রহমান নুর আলমের কারামুক্তির আবেদন করেন। বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান আবেদন মঞ্জুর করে কারামুক্তির আদেশ দেন। শুনানিকালে নুর আলমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে তাকে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে নেয়া হয়। সেখানে ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সিনিয়র সহকারী জজ মো. আলমগীর হোসাইন তার সঙ্গে কথা বলেন।
আলমগীর হোসাইন জানান, নুর আলম রাজসাক্ষী হয়ে ২০ বছর ধরে জেলে আছেন, জানার পর তাদের অফিসের মাধ্যমে জামিন করিয়েছেন। খুলনার একটি মামলায় তার প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট দেয়া আছে বলে জানতে পেরেছি। সেখানকার আইনজীবীর সঙ্গেও কথা হয়েছে। আশা করি, ওই প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার হলেই তিনি কারামুক্ত হবেন।
এদিকে, লিগ্যাল এইড অফিসে নুর আলম জানান, তিনি ১২টি হত্যা মামলার রাজসাক্ষী। ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে কারাগারে আছেন। কারাগারে থাকা অবস্থায় ছেলে রাফী (১৮) মারা গেছে এবং স্ত্রী ছেড়ে গেছে। বাড়ি, জমি এখন কিছুই নেই। মুক্তি পেলে কোথায় যাবেন, জানেন না। প্রথম জীবনে জাহাজে চাকরি করতেন। সেই চাকরি ছেড়ে এরশাদ শিকদারের দেহরক্ষী হিসেবে যোগ দেন।