অনলাইন ডেস্কঃ
ওজোপাডিকোর প্রি পেইড মিটারে বিদ্যমান দুর্নীতি-অনিয়মের প্রতিবাদে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ওজোপাডিকোর প্রি পেইড মিটারে বিদ্যমান দুর্নীতি প্রতিরোধে সংগ্রাম কমিটি, খুলনা। আজ সোমবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
১২ দফা দাবিতে ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মঙ্গলবার(১৬জুলাই) জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এবং বুধবার(১৭জুলাই) বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ, ১৮ জুলাই দুদক চেয়ারম্যান বরাবর বিভাগীয় পরিচালকের মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ, ১৯ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সংগ্রাম কমিটির থানা ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন, আগষ্ট মাসজুড়ে ২১ জেলায় মতবিনিময় এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে কনভেনশন।
সোমবার খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক ডা: শেখ বাহারুল আলম।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দেশের বিদ্যুৎ খাতের অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দক্ষ নেতৃত্বে যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্লোগান নিয়ে দেশ ক্রমান্বয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখনই খুলনাসহ পদ্মার এপারের একুশ জেলা নিয়ে গঠিত ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ২/১ জন কর্মকর্তা এ অঞ্চলের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের নিষ্পেষনের জালে নিমজ্জিত করে নিজেদের আখের ঘোচাতে ব্যস্ত রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, প্রি পেইড মিটার নামক যন্ত্রদানব খুলনার গ্রাহকদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে ওজোপাডিকো নিজেদের ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি জনগনের স্বার্থে আন্দোলন শুরু হয়। ইতোমধ্যে প্রি পেইড মিটারে বিদ্যমান দুর্নীতি প্রতিরোধে সংগ্রাম কমিটি গঠনের মধ্যদিয়ে সংবাদ সম্মেলন, মানব বন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এক পর্যায়ে বিষয়টি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ¦ তালুকদার আব্দুল খালেকের দৃষ্টিতে আসলে তিনি উভয় পক্ষকে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন। গত ২৬ জুন কেসিসির সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে সিটি মেয়র ওজোপাডিকোর এমডিকে সংগ্রাম কমিটির সাথে বৈঠক করে পরবর্তী সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন। কিন্তু এ পর্যন্ত ওজোপাডিকোর পক্ষ থেকে কোন বৈঠকের উদ্যোগ নেয়াতো হয়ইনি বরং সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে সম্প্রতি ওজোপাডিকোর এমডি বরাবর লিখিতভাবে বৈঠকের অনুরোধ জানিয়ে পত্র দেয়া হয়। যার কপি ডাকযোগে পাঠানো ছাড়াও ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক, নির্বাহী পরিচালক(অর্থ), নির্বাহী পরিচালক(প্রকৌশল) এবং কোম্পানি সচিবের নিজস্ব ই-মেইলেও পাঠানো হয়। অথচ এখন পর্যন্ত সংগ্রাম কমিটির সাথে বৈঠক করে প্রি পেইড মিটারের সমস্যা সমাধান ও কোম্পানীর কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বন্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
পক্ষান্তরে টুটপাড়ার একজন গ্রাহককে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলা সম্পর্কে রোববার ওজোপাডিকো সদর দপ্তরে সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত হয়ে কোম্পানীর নির্বাহী পরিচালক অর্থ রতন কুমার দেবনাথ ও নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশল(অ:দা:) মো: আবু হাসানের সাথে কথা বলে গ্রাহক হয়রানির এমন অপকৌশল থেকে বিরত থাকার আহবান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ১২দফা দাবি উপস্থাপন করে এসব দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত জনগনকে প্রি পেইড মিটার প্রত্যাখ্যান করার আহবান জানানো হয়।
১২ দফা দাবি হচ্ছে, বিইআরসির সাথে চুক্তি অনুযায়ী ইতোমধ্যে প্রতিস্থাপন করা প্রি পেইড মিটারের জামানতের টাকা ফেরত দেয়া, ২শ’ কোটি টাকার রিবেট ২ কোটি তিন বছর আটকে রাখার লভ্যাংশ গ্রাহকদের ফেরত দেয়া, পূর্বের আত্মসাতকৃত রিবেটের টাকা পৃথক লাইনে নয় বরং সহজে ফেরত দেয়া, ওজোপাডিকোর সদর দপ্তরকে জনগনের জন্য উম্মুক্ত করা, অকেজো ডিজিটাল মিটারের মূল্য পরিশোধ করা, মিটার স্থানান্তরের সময় টাকা বা ফি না নেয়া, ওজোপাডিকোর সকল দুর্নীতি বন্ধ করা, ফ্রি মিটার দেয়ার নাম করে ভাড়া নেয়া বন্ধ করা, অবৈধ পন্থায় মিটার আমদানী বন্ধ করা, লক ছাড়াতে ফি নেয়া বন্ধ কর করা, পূর্বের জামানতের টাকা ফেরত দেয়া এবং বাড়তি সংযোগ ফি না নেয়া।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সংগ্রাম কমিটির যুগ্ম আহবায়ক শরীফ শফিকুল হামিদ চন্দন ও মোড়ল নূর মোহাম্মদ শেখ, সদস্য সচিব মহেন্দ্রনাথ সেন, যুগ্ম সদস্য সচিব শাহ মামুনুর রহমান তুহিন, তপন রায়, মফিদুল ইসলাম, শেখ আব্দুল হালিম, রুহুল আমিন সিদ্দিকী, এড. মেহেদী ইনসার, জি এম রাসেল ইসলাম, মাহবুবুল আলম প্রমুখ।