জিম্বাবুয়ে ফেরত বাংলাদেশি দুই নারী ক্রিকেটার করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন। তাদের সংস্পর্ষে যারা এসেছিলেন তাদের শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, ‘ওমিক্রনে আক্রান্ত দুজনই স্বাভাবিক আছেন। কারও কোনও ধরনের জটিল উপসর্গ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা কন্টাক্ট ট্রেসিং করছি, সবাইকে পরীক্ষার আওতায় এনেছি। যারা সঙ্গে ছিল বা সংস্পর্শে এসেছে, সবার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, জিম্বাবুয়ে থেকে আসা আমাদের দুই নারী ক্রিকেটার; যাদের শরীরে ওমিক্রন ভাইরাস পাওয়া গেছে, তাদের আমরা কোয়ারেন্টিনে রেখেছি এবং তারা সুস্থ আছে। তাদের যা যা চিকিৎসা দরকার সেগুলো ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঝে মাঝেই পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে কী অবস্থায় আছে। পুরোপুরি সেরে উঠতে হয়তো কিছু দিন সময় লাগবে। অন্তত ২ সপ্তাহ লাগবে। পুরোপুরি যখন সেরে উঠবে তখনই আমরা তাদের ছাড়তে পারবো।
দেশের বাইরে থেকে যারা আসবেন তাদের সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আফ্রিকার বাইরে ৬২টা দেশে এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে এই ওমিক্রন ভাইরাস। এটি খুবই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, কিন্তু উপসর্গটা মৃদু। এখন পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর সংবাদ আমরা পাইনি। ডেলটা ভাইরাসের থেকে বেশি ক্ষতিকারক নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বরাত দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডব্লিউএইচও বলেছে— আমরা যে টিকা ব্যবহার করছি, এই টিকাও ওমিক্রন দমনে কিছুটা কাজ করে। যেসব টিকা আমরা ব্যবহার করছি, সেগুলোর প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। সে জন্য আমরা চাইবো, যারা এখনও টিকা নেয়নি তারা তাড়াতাড়ি যেন টিকা নেয়। আমরা প্রায় ৭ কোটির মতো টিকা দিয়েছি। দ্বিতীয় ডোজ ৪ কোটির মতো হয়েছে। টিকা নেওয়ার আগে যে আগ্রহ ছিল, আমরা দেখছি এখন ভাটা পড়েছে। যারা টিকা নিচ্ছে তারা কিন্তু তেমন অসুস্থ হচ্ছে না। আমাদের হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা কম, মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম। দুদিন আগে শূন্য ছিল, গতকাল ১ ছিল। টিকার ব্যবস্থার ফলেই এ পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, গেল ৮ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হওয়া করোনার এই ভ্যারিয়েন্টটি এরই মধ্যে অর্ধশতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন’ বা উদ্বেগজনক হিসেবে শ্রেণিভুক্ত এই ভ্যারিয়েন্টটি সম্পর্কে এক প্রাথমিক গবেষণায় বলা হচ্ছে, ডেলটা ও বেটা ধরনের তুলনায় ওমিক্রনের পুনরায় সংক্রমিত করার ক্ষমতা তিনগুণ বেশি। আগে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে গড়ে ওঠা প্রতিরোধ ব্যবস্থাও ভেঙে দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে বলেও ওই গবেষণাটিতে বলা হচ্ছে।
দেশের বিশেষজ্ঞরা আগে থেকেই এ বিষয়ে আশঙ্কা করে বলে আসছেন, সচেতন না হলে বাংলাদেশেও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে এই ভ্যারিয়েন্টটি।