করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বাত্মক লকডাউনের চতুর্থ দিনে খুলনা মহানগরীতে ছোটখাট যানবাহনের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। আগের তিন দিনের তুলনায় রাস্তায় মানুষের চলাচলও বেড়েছে।
খুলনা নগরীর প্রবেশদ্বার রূপসা খেয়াঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নদীতে নৌকা চলাচল করছে কম। পারাপারের ঘাট বন্ধ থাকায় নৌকার মাঝিরা বিকল্প হিসেবে মাছ ঘাটকে ব্যবহার করছেন। সংখ্যায় কম চললেও নৌকায় যাত্রীর পরিমাণ ছিল বেশী । যদিও পূর্ব রূপসা খেয়াঘাটে পুলিশের উপস্থিতি ছিল। রূপসা রাম নগরের বাসিন্দা জাহিদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, “নৌকার ভাড়া বেশী নেওয়া হলেও যাত্রীর সংখ্যা আগের মতোই রয়েছে। এখানে একজনের সাথে আরেকজনের শরীরের স্পর্শ ঠিকই লেগে থাকছে। তাহলে লকডাউন দিয়ে লাভ কি?”
লকডাউনে জরুরী পণ্য সামগ্রীর দোকান খোলা রাখার কথা বলা হলেও নগরীর পাওয়ার হাউস মোড়ে অধিকাংশ দোকনের অর্ধেক ও ফুল সার্টার খুলে ব্যবসা পরিচালনা করতে দেখা গেছে। এ দৃশ্য নগরীর প্রাণকেন্দ্র ডাকবাংলা ও ফেরীঘাটের মোড়েও দেখা গেছে। মাঝে মধ্যে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ী দেখলে তড়িঘড়ি করে তারা দোকান বন্ধ করে দেয়।
বেলা ১২ টায় নগরীর সাতরাস্তা মোড়ে বেস্ট ফর্ণিচারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের একটি দল অভিযান চালালে দোকান মালিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রেখে পালিয়ে যায়। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়।
এদিকে কেএমপির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, খুলনা মহানগরীর প্রবেশদ্বারসহ বিভিন্ন স্থানে সর্বমোট ২৬ টি চেকপোস্ট বসিয়ে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য চেকপোস্ট কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে এবং এই কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চলমান লকডাউন কার্যক্রমে কেএমপির আট (০৮) টি থানা এলাকায় গত ১৪ থেকে ১৬ এপ্রিল ২০২১ পর্যন্ত আটককৃত মোটরসাইকেল ১৭ টি, সিএনজি ০৩ টি, অন্যান্য-১০ টি, মোট জব্দকৃত গাড়ী ৪০৬ টি এবং এ সংক্রান্তে মামলা ৮৯ টি।
উক্ত ০৩ (তিন) দিনে মাস্ক পরিধান না করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলা এবং অপ্রয়োজনে বাহিরে বের হয়ে ঘোরাঘুরি করার অপরাধে কেএমপি’র বিভিন্ন থানার সহোযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ও ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৫৫ টি এবং ৮২ জনকে ৮৫,৭৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এছাড়াও, লকডাউন কার্যকর করতে কেএমপি’র ১০ টি মোবাইল টিম, গোয়েন্দা পুলিশের দু’টি টিম, থানা, ফাঁড়ি এবং ট্রাফিক পুলিশের সদস্যগণ ২৪ ঘন্টা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।