গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে পরপারে চলে গেলেন বাংলাদেশের সিনেমার কিংবদন্তী নায়িকা কবরী। কবরী’র সঙ্গে তার পরবর্তী প্রজন্মের অনেকেরই সুযোগ হয়েছে একই সিনেমাতে অভিনয় করার। এদিকে রাজনৈতিক কারণে কবরীর সঙ্গে বেশ সখ্য ছিলো শাহনূরের। কারণ কবরী ছিলেন ‘বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট’র সেক্রেটারী, যেখানে শাহনূর চলচ্চিত্র বিষয়ক সম্পাদক। যে কারণে বলা যায় বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট’ আয়োজিত প্রায় সবগুলো অনুষ্ঠানেরই কবরী’র সঙ্গে দেখা হতো শাহনূরের। সেই কবরী’র প্রয়াণে ভীষণ কষ্ট পেয়েছেন শাহনূর। তার ভাষ্যমতে এখনো শাহনূর সারাটাক্ষণই কবরী’কে নিয়েই ভাবছেন। একটা মুহুর্তের জন্যও তাকে ভুলতে পারছেন না শাহনূর। শাহনূর বলেন,‘ এটা মেনে নিতে খুউব কষ্ট হচ্ছে আমার এখনো যে আমার ভীষণ প্রিয় কবরী আপা আর আমাদের মাঝে নেই। করোনার কারণে গৃহবন্দী হয়ে আছি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট’র কোন মিটিং হচ্ছেনা। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার যখন এই জোট আয়োজিত অনুষ্ঠানে যাবো, প্রিয় কবরী আপাকেতো আর দেখতে পাবোনা। এটা যে কতো কষ্টের সত্যিই ভাষায় প্রকাশের নয়। কী মিষ্টি চেহারা ছিলো তার, কতো জ্ঞানী ছিলেন তিনি , তার সঙ্গে কথা বললেই তা অনুভব করতে পারতাম। আমাকে খুউব স্নেহ করতেন। আমিও তাকে ভীষণ শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু সেই মানুষটি আর নেই, আমি ভাবতেই পারছিনা। বলা যায় প্রতিদিনই তাকে নিয়ে ভাবছি, তার কাজগুলো দেখছি, স্মৃতিচারণ করছি, আর দোয়া করছি আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসীব করেন। আমি যে কিছুদিন আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছি, কবরী আপাকে একজন নির্মাতা হিসেবে ভেবে অনুপ্রাণিত হয়েই আমি নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করি।’
কবরী অভিনীত প্রথম কোন সিনেমা শাহনূর দেখেছেন তা মনে নেই। তবে কবরী অভিনীত সিনেমা ‘সুতরাং’ থেকে শুরু করে যতো দর্শকপ্রিয় সিনেমা আছে তা তিনি বড় হয়ে দেখেছেন। শাহনূর জানান কবরীর মৃত্যুর পর তার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেসব কথা তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং শাহনূর বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘কী যে ভীষণ সত্যি কথাগুলো তিনি অকপটে বলে গেলেন, তারপরও তার কথাগুলোর সূত্র ধরে কোন উদ্যোগ নেয়া হবে কী না এ প্রশ্ন থেকেই যায়’।
এর মধ্যে শাহনূর শেষ করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ‘আশীর্বাদ’ এবং রফিক শিকদার পরিচালিত ‘বসন্ত বিকেল’ সিনেমার কাজ। শাহনূর এরইমধ্যে নিজের নামে একটি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত করেছেন, যার নাম ‘শাহনূর ফাউন্ডেশন’। এই ফাউন্ডেশন থেকে পথশিশু, নির্যাতিত শিশু, নানান কারণে অসহায় মানুষ, নির্যাতিত নারী, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা’সহ আরো অনেকের পাশে সহযোগিতার হাত নিয়ে পাশে দাঁড়াবে নিয়মিত।
এবিএন/মারুফ সরকার/জসিম/তোহা