বেল্লাল হোসেন সজল :: খুলনার আকাশে জমেছে মেঘ। থেমে থেমে বৃষ্টি। বৃষ্টি নেই আবার হঠাৎ করেই ঝুম বৃষ্টি। করোনার আকাশেও হয়ত জমেছে সংক্রমণের মেঘ। আক্রান্ত কখনো বাড়ছে আবার কখনো কমছে। বোঝা বড় দায়। তাইতো খুলনায় থেমে থেমে লকডাউন। কখনো হালকা আবার কখনো কঠোর লকডাউনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে খুলনার মানুষের জীবন যাত্রা। আজ মঙ্গলবার (২২জুন) থেকে আগামী সাতদিন চলবে কঠোর লকডাউন। এর আগে দু’সপ্তাহের কঠোর বিধি-নিষেধের মধ্যে ছিলো খুলনার তিন থানা এলাকা।
লকডাউনের প্রথম দিনে খুলনার রাস্তায় সাধারণ মানুষের চলাচল অনেক কম। কাঁচাবাজার ও ওষুধের দোকান ব্যতীত অন্য সকল দোকান-পাট ও শপিংমল বন্ধ রয়েছে। খুলনার অধিকাংশ রাস্তাঘাট বাশ দিয়ে ব্যরিকেড দেয়া হয়েছে। সোমবার রাত থেকে বিভিন্ন এলাকার প্রবেশ পথে বাশ দিয়ে ব্যরিকেড দেয়া হয়েছে। সকাল থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের তিনটি ইউনিট শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করছেন। সকাল থেকে দুরপাল্লার কোন বাস খুলনা থেকে ছেড়ে যায়নি। বন্ধ রয়েছে ট্রেন চলাচল।
নগরীর ডাকবাংলা, পিকচার প্যালেস মোড়, শিববাড়ি ও সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়া মতো। ডাকবাংলা ও পিকচার প্যালেস মোড়ের সব দোকান বন্ধ রয়েছে। শিববাড়ি মোড়ে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। কৌতুহল নিয়ে অনেকেই রাস্তায় বের হচ্ছেন।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় খুলনায় পৃথক চারটি হাসপাতালে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ৯ জনের মধ্যে খুলনা করোনা হাসপাতালে চারজন, গাজী মেডিকেল হাসপাতালে তিনজন ও জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একজন ও ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া ২৪ ঘন্টায় করোনা সংক্রামণের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬২৯ জনের এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৬৮জন ও আক্রান্তের হার ৪২শতাংশ।
খুলনা বিভাগে ফের বেড়েছে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় অদৃশ্য এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিভাগে মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। এসময়ে সর্বাধিক মৃত্যু ও শনাক্ত হয়েছে খুলনা জেলা ও মহানগরীতে। একই সময়ে বিভাগে ৯৯৮ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এর আগে গতকাল (সোমবার) রাতে খুলনা বিভাগের প্রায় সকল জেলায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ উদ্বেগজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভাগের ১০ জেলার সাথে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক পর্যালোচনা সভা ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সভায় গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। মাস্ক পরার ব্যাপারে যে কোন ধরণের শৈথিল্য প্রদর্শনের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এছাড়া জনগণকে সচেতন করতে নিয়মিত মসজিদে জুম্মার খুদবায় কোরআন ও হাদীসের আলোকে আলোচনা করার জন্য ইমাম/খতিবদের প্রতি আহবান জানান। যে সকল জেলায় স্থানীয়ভাবে কঠোর লকডাউন চলছে সে সকল জেলায় পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া অন্য কোন যানবাহন চলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।