আসন্ন শীতকালে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফায় আঘাত হানার আশংকা রয়েছে। যদি প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শীতকালে আঘাত হানে তাহলে তার মোকাবেলায় সরকার ইতোমধ্যেই কঠোর সতর্ক অবস্থান নেয়ার পাশাপাশি নানান কর্মপরিকল্পনায় এগুচ্ছে। তবে প্রথম দফার করোনার আঘাতে কিছুটা সংকটে পড়ার পর আবার ঘুরে দাঁড়ানো অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার সব পথ খোলা রেখেই এই কর্মপরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে বেশ কয়েকজন সচিব, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, আইজিপি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারসহ (পিএসও) সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের জানান, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে নিজেদের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ যদি আসে আমরা টোটাল প্রোগ্রামকে ভাগ করে নিলাম। ক্লিনিক্যাল সাইডটা আমাদের এক্সপার্টরা রেডি করবেন। যদি রোগটা বিস্তার করে কীভাবে তার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান হবে। সাপ্লিমেন্টারি ক্লিনিক্যাল সাইড- যেহেতু শীতের সময় অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা বেশি থাকবে, সেটাকেও ইমিডিয়েটলি সবাইকে সচেতন করে দেয়া এবং তারও একটা ট্রিটমেন্ট প্ল্যান রেডি করা। ব্যাপক প্রোমোশনাল ক্যাম্পেইন চালাতে হবে সবাই যাতে মাস্ক পরে। সবাই যাতে দূরত্বটা বজায় রাখে। স্বাস্থ্য নির্দেশিকা সবাই যাতে মেনে চলে।
মাঠ প্রশাসন, স্থানীয় সরকার, পুলিশ, সেনাবাহিনী কীভাবে এনফোর্সমেন্ট করবে সেই ওয়ার্ক প্ল্যানও করা হবে বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আমাদের দেশে ব্যাপক লোকজন বাইরে থেকে আসছে ও যাচ্ছে। তাদেরকে কীভাবে পূর্বসতর্কতামূলকভাবে ট্রিটমেন্ট করব সে বিষয়ে প্ল্যান করা হচ্ছে যাতে বাইরে থেকে আর ভাইরাস না আসে। বিমানবন্দরে সেনাবাহিনীর বড় টিম আছে, উনারা দেখাশোনা করছেন। আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়গুলোকে ওয়ার্ক প্ল্যান রেডি করতে বলা হয়েছে। ওয়ার্কপ্ল্যান করে ওপেন করে দেব।
অভিযান বাড়ানো হবে কিনা- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না। সিনারির ওপর ডিপেন্ড করবে। যদি কোনো রকম ইমপ্যাক্ট না হয়, আমাদের মূল কথা থাকবে আমরা ইকনমিকে সচল রাখব, ইনশাআল্লাহ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন অফিসগুলো কীভাবে চালাবে সেই দায়িত্বও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে দেয়া হয়েছে- উল্লেখ করেন আনোয়ারুল।
করোনার দ্বিতীয় দফা আঘাত এলে আবারও লকডাউন দেয়া হবে কিনা- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে তারা এখনও এটা চিন্তা করেননি বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।