চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃগণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস নির্ণায়ক ‘জি র্যাপিড ডট ব্লট’ কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা সোমবার (১১ মে) থেকে শুরু করার কথা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ)। সে অনুযায়ী কিট সরবরাহের প্রস্তুতি নিয়েছিল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে কোনো চিঠি দেয়নি বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ এবং কিট নেওয়ার জন্য কোনো লোকও পাঠায়নি।
কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা শুরুর বিষয়টি বিএসএমএমইউ গঠিত কমিটি রোববার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিনিধিদলকে নিশ্চিত করেছিল। এ বিষয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী রোববার বলেছিলেন, ‘বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ ফোনে আমাদের কাছে ২০০ কিট চেয়েছে এবং আমরা তা দিতে প্রস্তুত আছি। চিঠি পেলেই আমরা কিট সরবরাহ করবো।’
এমতাবস্থায় সোমবার বিকালে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সেখানে বিএসএমএমইউ থেকে অনুমোদনের আগে সরকারের কাছে কিটের সাময়িক সনদপত্র চেয়েছেন তিনি।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সরকারের কাছে একটা আবেদন করতে চাচ্ছি আমি- অন্তত যতদিন না পর্যন্ত এই তুলনামূলক এফেক্টিভনেস পরীক্ষার রিপোর্ট আসে, ততদিন আমাদের একটা সাময়িক সদনপত্র দেন। যাতে লোকের করোনা হয়েছে কি হয়নি, তা র্যাপিড ডট ব্লটের মাধ্যমে প্রতিদিন পরীক্ষা করে বলে দিতে পারি।’
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা যদি শুরু করি, তাহলে বলবে যে উনারা নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না, নিয়মনীতি মানেন না, প্যারালাল করছি। যেহেতু কমিটির কাজ পেন্ডিং আছে, সেহেতু এটা করা যায় কী না সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা সরকারের কাছে এই আবেদন করছি।’
বিএসএমএমইউ গঠিত কমিটির কাজে ধীর গতির প্রসঙ্গ টেনে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘এই কমিটি আমাদের জানাবেন, আমরা তাদেরকে কিট দেব। এই একই কাহিনী কতদিন আমরা করবো। আমাদের অপারগতা এই যে, আমরা বুঝাতে সক্ষম হয়নি এটা জাতীয় গুরুত্ব, দ্রুত এটা করা দরকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কিছুটা হলেও সাহায্য করতে পারতাম। সবকিছুর আমরা পরিবর্তন করতে পারতাম না। কিন্তু লোকজনকে একটু মানসিক স্বস্তি দিতে পারতাম। কিন্তু পারিনি।’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘প্রতিদিন ২৬০ থেকে ৩০০ রোগীর ডায়ালাইসিস করে থাকি। আমাদের কাছে রোগী আসে তার করোনা পজিটিভ। তাকে চিকিৎসা দিতে পারি না। কারণ আমার অন্য রোগীরা অ্যাফেকটেড (আক্রান্ত) হয়ে যাবে।’
এ সময় জনসাধারণের উদ্দেশে বলেন, ‘জনসাধারণের কাছে আবেদন করছি, আমাদের ধানমন্ডিতে হাসপাতালের আশেপাশে ৫ হাজার স্কয়ার ফিট জায়গা দিলে আমরা সেখানে দ্রুত মেশিন বসিয়ে করোনা আক্রান্ত ১০০ জনের ডায়ালাইসিস করে দিতে পারি। অথবা অন্য কেউ যদি হাসপাতালের কোনো অংশ আমাদের দেয় তাহলে এই কিডনি রোগীদের চিকিৎসা করতে পারি।’
এদিকে প্রক্রিয়াধীন একটি বিষয় নিয়ে এধরণের মন্তব্য অপ্রত্যাশিত বলে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। টেস্ট কিট পরীক্ষার বিষয়টি এখনো প্রক্রিয়াধীন জানিয়ে ভাইস চ্যান্সেলর কনক কান্তি বড়ুয়া বলেছেন, অভিযোগের ফলে এর সাফল্য নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তারা যদি এরকম করে, তাহলে যে টিম কাজ করছে তারা উৎসাহিত হবে না।
করোনা কিট ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ প্রত্যাশিত নয় বলেও মন্তব্য করেন ভাইস চ্যান্সেলর।