পিরোজপুর প্রতিনিধি :: কাউখালীতে করোনা কালীন প্রনোদনার অর্থ বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বিআরডিবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তালিকায় বৈষম্য ও বিত্তবান ব্যবসায়ীদের নাম থাকায় জনপ্রতিনিধিদের ক্ষোভ প্রতিবাদের কারণে প্রণোদনার চেক বিতরণ কার্যক্রম প্রশাসন স্থগিত করেছেন।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার উপজেলা হলরুমে পল্লী উন্নয়ন বোর্ডেও উদ্যোগে করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের চেক বিতরণ অনুষ্ঠান শুরু হলে মিটিংয়ে উপস্থিত উপজেলা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানরা তালিকায় জাতীগত বৈশম্য অনিয়মের কঠোর প্রতিবাদ করেন। প্রতিবাদের মুখে উপজেলা প্রশাসন বুধবার চেক বিতরণ সাময়িক ভাবে স্থগিত ঘোষণা করলে গতকাল বৃহস্পতিবার আবার চেক বিতরণ কার্যক্রম শুরু হলে জনপ্রতিনিধি, বঞ্চিত ব্যবসায়ীরা ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে তালিকাটি সমন্বয় করার দাবি জানালে প্রশাসন চেক বিতরণ কার্যক্রম আবারো স্থগিত করেন।
চেয়ারম্যানরা অভিযোগ করেন প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্রণোদনা বঞ্চিত হয়েছেন অথচ সচ্ছলও বিত্তবানদের নামে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এতে বঞ্চিত হয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে কাউখালী পল্লী উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সরকারী বিশেষ প্রনোদনার অর্থের তালিকায় রয়েছেন সচ্ছল ও বিত্তবান ব্যবসায়ীরা। প্রনোদনার অর্থ যেখানে পাওয়ার কথা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সমবায়ী সদস্যদের অগ্রাধীকার ভিত্তিতে অথচ তাদেরকে না দিয়ে বিত্তবান ব্যবসায়ীদের দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে বঞ্চিত হয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও সমবায়ীরা। উপজেলার ৫হাজার সমবায়ী সদস্যের অনেক সদস্যই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এসকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা করোনার আঘাতে নিঃস্ব হয়ে অনেকেই পথে বসেছেন। অভিযোগ উঠেছে ২১জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দেখিয়ে ৩৯লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। এদের নামে ১ থেকে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যাদের নামে ক্ষুদ্র ব্যবসা দেখিয়ে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এদের মধ্যে অনেকেই উপজেলার প্রথম শ্রেণীর বিত্তবান বড় ব্যবসায়ী। এমনকি খোদ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের ইউসিসি লিঃ এর সভাপতি উপজেলার প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী হারুণ খানের নামেও ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যপারে বিআরডিপি সভাপতি মোঃ হারুন অর রশিদ খান জানান, প্রনোদনার অর্থের তালিকা তাকে না জানিয়েই তৈরি করেছে। বিআরডিবি কর্মকর্তা নমিতা রানী জানান উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দ্রুত সময়ের মধ্যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং বিআরডিবির ডিজি প্রিয় লাল কুন্ডুর বাবার অনুরোধে তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। যে কারণে জনপ্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয় সম্ভব হয় নাই।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৃদুল আহমেদ সুমন বলেন, করোনাকালীন এই সময় অধিকাংশ ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, কিন্তু বিআরডিবি কর্মকর্তা যে তালিকা করেছে তা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের কারো সাথে সমন্বয় না করে নিজেদের মত করে নাম অন্তর্ভূক্ত করেছে। এতে প্রকৃত যারা ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তারা বঞ্চিত হয়েছে। যে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা দিয়ে ছোট ছোট থোক করে বহু ব্যবসায়ীকে দেয়া যেত।
জনপ্রতিনিধিদের ক্ষোভের কারণে উপজেলা প্রশাসন সাময়িকভাবে চেক বিতরণ স্থগিত ঘোষণা করেছেন।