আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ভারতীয় সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ভূস্বর্গ খ্যাত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করায় অঞ্চলটিতে ইতোমধ্যে এক থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যা নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ফের নির্যাতিত কাশ্মীরিদের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বের কোনো দেশ যদি কাশ্মীরের নির্যাতিতদের পাশে না থাকে, তা হলেও পাকিস্তান তার আগের অবস্থানে থাকবে। এ জন্য যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সর্বদা প্রস্তুত।’
রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে সদ্য সমাপ্ত জাতিসংঘ মিশন শেষে দেশে ফিরে তিনি এসব কথা বলেন। খবর ‘দ্য ডনে’র।এদিন ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত হন দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী। পাকিস্তান সরকার এবং ক্ষমতাসীন তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের নেতৃবৃন্দ ইমরানের এই নিউইয়র্ক সফরকে অত্যন্ত সফল বলে দাবি করছেন।
ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে উপস্থিত সাংবাদিকদের পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিউইয়র্কে জাতিসংঘের অধিবেশনে কাশ্মীরি মিশনে সমর্থন জানানোয় পাকিস্তানের সকল জনগণের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।‘ স্ত্রী বুশরা বিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে ইমরান খান বলেছেন, ‘বুশরা বিবি জাতিসংঘের কাশ্মীর মিশনের জন্য আল্লাহ্র কাছে অনেক বেশি দোয়া করেছেন।
বিমানবন্দরে দেওয়া সংক্ষিপ্ত ভাষণে ইমরান খান বলেন, ‘কাশ্মীর নিয়ে আমাদের চলমান সংগ্রামে উত্থান-পতন থাকবেই; তবে কঠিন সময় এলে জনগণকে হতাশ না হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। কেননা সকল কাশ্মীরি জনগণ এখন আপনাদের দিকেই তাকিয়ে আছেন।
প্রধানমন্ত্রী ইমরান তার বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, ‘আমার সরকার কাশ্মীরকে স্বাধীন করার জন্য এমন কোনো প্রচেষ্টা নেই যা করবে না। আমরা সর্বদাই এর জন্য প্রস্তুত।একই সঙ্গে তিনি অঙ্গীকার করে আরও বলেছিলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে এই প্রতিশ্রুতি করছি যে, এখন থেকে আমরা বিশ্বের সম্ভাব্য সব ফোরামে নরেন্দ্র মোদীর ফ্যাসিস্ট ও মুসলিম বিদ্বেষী চেহারা উন্মোচন করে যাব।
এর আগে গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করেছিল ক্ষমতাসীন মোদী সরকার। যার প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে বিতর্কিত লাদাখ ও জম্মু ও কাশ্মীর সৃষ্টির প্রস্তাবেও সমর্থন জানানো হয়।এসবের মধ্যেই চলমান কাশ্মীর ইস্যুতে পাক-ভারত মধ্যকার সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে একে একে ভারত সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য, যোগাযোগসহ সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্নের ঘোষণা দিয়েছে প্রতিবেশী পাকিস্তান। যদিও এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে ভারত পাশে পেয়েছে রাশিয়াকে এবং পাক সরকারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ ইরান।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারসহ রাজ্যের স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানানো হলেও; কাশ্মীর জুড়ে এখনো সংঘর্ষ ও গ্রেফতারের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি পাকিস্তানের।