চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ খুলনা আধুনিক রেলস্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন বহু কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। তার স্ত্রী ও সন্তানদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে বহু কোটি টাকার এফডিআর এবং খুলনা, যশোর ও নড়াইলে একাধিক বাড়ি ও জমি কেনার লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধানে নেমেছে।
দুদকে দাখিল করা অভিযোগে বলা হয়, রেলস্টেশন মাস্টার মানিকের একটি ডুপ্লেক্স বাড়িসহ তিনটি বাড়ি, সাড়ে সাত কোটি টাকার এফডিআর, একটি ফ্ল্যাট এবং ১৭ একর জমি রয়েছে। আর এসব সম্পত্তির বেশির ভাগই করেছেন স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ের নামে। ঢাকায় তার ভাড়া করা বিলাসবহুল ফ্ল্যাটও রয়েছে। এ বছরের জুনে দাখিল করা এসব অভিযোগ আমলে নেয় দুদকের প্রধান কার্যালয়। এরপর প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে খুলনার একজন উপ-সহকারী পরিচালক অভিযোগগুলোর তদন্ত শুরু করেন। মানিকের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- তার নিজ গ্রাম নড়াইল জেলায় ১০ একর জমির ওপর চারতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণ, খুলনার দৌলতপুর ও মুহসিন মোড়ে দুই কোটি টাকা দামের সাত একর জমি ক্রয়, সিটি ব্যাংকে স্ত্রীর নামে চার কোটি টাকার এফডিআর, খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকায় তার সন্তানদের নামে আড়াই কোটি টাকা দামের দুই হাজার বর্গফুটের ফ্ল্যাট ক্রয়, ২০১৭ সালে স্ত্রীর নামে খুলনার মৌলভীপাড়ায় আড়াই কোটি টাকা দামের বাড়ি ক্রয় (ঠিকানা ১৪৩/৩)। এছাড়া ২০১৫ সালে যশোরের বেজপাড়া এলাকায় স্ত্রীর নামে তিনতলা বাড়ি ক্রয় (ঠিকানা ৭৩/৪), পাশাপাশি রাজধানীর ধানমণ্ডিতে ওয়ান ব্যাংক শাখায় স্ত্রীর নামে আড়াই কোটি টাকার এফডিআর, যশোরের শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে সন্তানদের নামে এক কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। এমনকি স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের জন্য ঢাকার শেরেবাংলা নগর রোডে মাসিক ৬৫ হাজার টাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে মঙ্গলবার বিকালে খুলনা রেলস্টেশনে গিয়ে স্টেশন মাস্টার মানিক সরকারকে পাওয়া যায়নি। তবে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। মানিক সরকার দাবি করেন, খুলনা রেলস্টেশনের কয়েকজন ব্ল্যাকার ও একটি কুচক্রি মহল তার বিরুদ্ধে এমন প্রচারণা চালাচ্ছে। তার স্ত্রী ও ছেলেমেয়ের নামে কোনো ব্যাংক ব্যালেন্স নেই। এমনকি তাদের নামে কোনো সম্পদও নেই। তার শুধু একটি টিনের ঘর আছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, তার মেয়ের অনেক আগেই বিয়ে হয়ে গেছে এবং তার ছেলে লেখাপড়া করে। এ বিষয়ে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল জানান, মানিক সাহার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আছে। এগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তবে এ মুহূর্তে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।