দেশে বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনের সু্যোগ এলেও তৎকালীন সরকার প্রধান খালেদা জিয়ার অদূরদর্শী নেতৃত্বের অভাবে তা বাস্তবে রূপ নেয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
রোববার (২৭ ডিসেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সব উপজেলা পরিষদে নবনির্মিত কমপ্লেক্স ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ করে পঞ্চম/ষষ্ঠ তলায় চার হাজার বর্গফুট ফ্লোর এরিয়া ব্যবহার বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, দেশে এক সময় সাবমেরিন ক্যাবল বিনামূল্যে স্থাপনের সুযোগ তৈরি হলেও তৎকালীন সরকার প্রধান খালেদা জিয়া বলেছিলেন এটির সংযোগ হলে দেশের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হবে এবং তথ্য পাচার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার অদূরদর্শিতার কারণে এ সুযোগ থেকে দেশ ও দেশের মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। এমনকি এ উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু ওই সময়ে পৃথিবীর অনেক দেশ সাবমেরিনে যুক্ত হয়ে এখন তার সুফল নিচ্ছে।
তাজুল ইসলাম বলেন, বর্তমান সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির সুফল অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর অন্য দেশের তুলনায় এ খাতে বাংলাদেশ অনেক সম্ভাবনাময়ী। তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে এবং লক্ষ্যমাত্রা ২০২১, ২০৩০ ও ২০৪১-এ পৌঁছাতে হলে সরকারের সব অঙ্গকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশ গার্মেন্টস শিল্প অথবা অন্য কোনো শিল্প দিয়ে শুরু করলেও আজ সব দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আমাদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমান তালে চলতে হবে, তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমেরিকা আজকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ হওয়ার ম্যাজিক হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন। এটা অনুধাবন করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সুযোগ্য পুত্র আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্ভাবনী শক্তিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের ইমেজ এখন বিশ্বে অনেক উপরে উঠেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যখন তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে বিতর্ক হয় তখন রেফারেন্স হিসেবে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেন তিনি।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ও আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রতিটি উপজেলায় নবনির্মিত উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তথ্য ও যোগাযোগ অধিদপ্তর বাস্তবায়নাধীন Establishing Digital Connectivity (EDC) প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে প্রতিটি উপজেলায় নেটওয়ার্ক সুইচরুম, উপজেলার নেটওয়ার্ক, অপারেশন সেন্টার, উপজেলায় আইসিটি সার্ভিস ডেস্ক, উপজেলায় সিটির ট্রেনিং ল্যাব ও অফিস স্থাপনের জন্য একটি করে আইসিটি অবকাঠামো ও অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।