১৪ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদরবাহিনীর সহযোগিতায় আত্মসমর্পণের প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের দেশের সূর্য সন্তান ৯৯১ জন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ যার মধ্যে খুলনা বিভাগের ২৮০ জন, ৪৯ জন চিকিৎসক, ৪২ জন আইনজীবীর মধ্যে খুলনা বিভাগের ৬ জন, ১৬ জন শিল্পী, সাহিত্যিক, প্রকৌশলী ও সাংবাদিকসহ অনেক মেধাবী গুণিজনদের নির্মমভাবে হত্যা করে।
দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচীর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রহমান খান এর নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার শহীদ বেদীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে পুষ্প্যমাল্য অর্পণ করা হয়। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা ভাবে শহীদ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সারোয়ার আকরাম আজিজ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ডা: খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার (শাজাহান), বিশ^বিদ্যালয়ের নীল দলের পক্ষ থেকে সভাপতি ডাঃ মোঃ আশিকুল আলম ও অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে থেকেও পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ও জাতীয় চার নেতা সহ শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শহীদুর রহমান খান বলেন ‘‘ স্বাধীনতার পূর্ব মুহূর্তে বিজয়ের মাত্র দুদিন আগে এই দেশকে মেধা শূণ্য করার জন্য দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাদের জাতির বিবেক শিক্ষক, ডাক্তার, সাহিত্যিক, সাংবাদিক সহ এক হাজার একশত এগারো জন বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওই সময়ের স্বাধীনতার পরাজিত শক্তিরা এখনও দেশের বিভিন্ন ইস্যু দিয়ে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এ সকল স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, রাজাকার ও নব্য আলবদরদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের জন্য বাঙ্গালী জাতি শহীদদের কে চিরদিন স্মরণ রাখবেন। সোনার বাংলা বিনির্মাণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত কে শক্তিশালী করতে সকল কে সর্বদা স্বোচ্চার থাকতে হবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে শেখ হাসিনার ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে সকলকে সহযোগীতা করার আহ্বান জানান। পরিশেষে এই শোক কে শক্তিতে রুপান্তরিত করে ২০৪১ সালের মধ্যে আধুনিক কৃষি শিক্ষা, গবেষণা, প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং হস্তান্তরের মাধ্যমে কৃষিবিদরা বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করে দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করবে বলে উপাচার্য মহোদয় আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং ১৪ ডিসেম্বরসহ সকল বুদ্ধিজীবীদের যারা হত্যা করেছেন তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এর আগে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শোক র্যালি ও সন্ধ্যায় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয়।