খুলনা: খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন মশিয়ালী গ্রামের ট্রিপল মার্ডারে জড়িতদের দ্রুত বিচার ও অস্ত্র উদ্ধারের দাবিতে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে মহানগরের ইস্টার্নগেট সংলগ্ন এলাকায় বৃহত্তর মশিয়ালী গ্রামবাসীর উদ্যোগে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি বেগ লিয়াকত আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন আটরা গিলাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মনিরুল ইসলাম, খানজাহান আলী থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা স ম রেজওয়ান আলী, ওয়ার্কার্স পাটির সম্পাদক সাত্তার মোল্যা।
ইউপি সদস্য এস এম বখতিয়ার পারভেজের সভাপতিত্বে এবং বাবুল রেজার পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন, আমিরুল সরদার, আনোয়ার সরদার, সালাম গাজী, তাবিবুর রহমান, হাফেজ মাসুম বিল্লাহ, মোসা রাজিয়া, রওশন সরদার, আ. হালিম, মো. রবিউল, মো. ই্উসুফ গাজী, আবুল কাশেম, মকবুল মোড়ল, বাবুল শেখ প্রমুখ।
বক্তারা মশিয়ালী গ্রামের মিল শ্রমিক নজরুল, কলেজছাত্র সাইফুল ও দিনমুজুর রসুল হত্যার মূলহোতা বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া হোসেন, তার ভাই বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা শেখ জাফরিন ও শেখ মিল্টনসহ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবার দ্রুত বিচার এবং হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের দাবি জানান।
মশিয়ালী গ্রামের একটি মসজিদ কমিটির মেয়াদ শেষ হলে সভাপতির পদ থেকে শেখ জাকরিয়াকে পদত্যাগ করতে বলেন মিল শ্রমিক মুজিবরসহ মসজিদের মুসল্লিরা। সবার দাবির মুখে শেখ জাকরিয়া বাধ্য হয়ে ১৭ জুলাই পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে সম্মত হন। এর আগে ১৬ জুলাই বিকেলে জাকারিয়া ও তার ভাইয়েরা অস্ত্র দিয়ে মিল শ্রমিক মুজিবরকে পুলিশের কাছে ধরিয়ে দেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদী এলাকাবাসীর ওপর জাকারিয়া-জাফরিন-মিল্টন বাহিনী নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মশিয়ালী গ্রামের মৃত বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৬০), একই এলাকার মো. ইউনুছ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০) এবং পরে গুলিবিদ্ধ এলাকার সাইদুল ইসলামের ছেলে আটরা মেট্রো টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সাইফুল ইসলাম (২২) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। গুলিবিদ্ধ হয়ে আফসার শেখ, শামিম, রবি, খলিলুর রহমান, মশিয়ার রহমানসহ বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় খানজাহান আলী থানায় নিহত কলেজছাত্র সাইফুল ইসলামের পিতা সাইদুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৮ জুলাই মামলা দায়ের করেন। মামলায় খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-প্রচার সম্পাদক শেখ জাকারিয়া হোসেন, তার ভাই মহানগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি শেখ জাফরিন ও মিল্টনসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ ও ১৫/১৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলার এজাহারভুক্ত ২২ জন আসামির মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।