চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ সরকারী দলের বিভিন্ন সহযোগি সংগঠনের পদ পদবী ব্যাবহার করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া খুলনার রাজনৈতিক অঙ্গনের বিতর্কিত নারী নেত্রীদের উপর নজরদারী ।দল ক্ষমতাসীন হওয়ার সাথে সাথে কিছু হাইব্রিড নারী নেত্রীরা সরকারী দলের বিভিন্ন সহযোগি সংগঠনের পদ ও বিভিন্ন ভুইফোর মানবাধিকার সংগঠনের ব্যানারে দেহ ব্যবসা,বড় কর্তাদের সুন্দরী নারী সরবরাহ করে নিজের এবং পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তনকারী কথিত নেত্রীরা গা ঢাকা দিতে শুরু করেছে । যে সকল নারী নেত্রীরা নগরী দাপিয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা,প্রশাসনের উপরতলায় চলাচলকারী হাইব্রিড সুন্দরী নারীরা রাতা রাতি কোটি কোটি টাকার মালিক,প্লট,ফ্লাট,হাইরাইজ বিল্ডিং,বিপুল ভূ-সম্পত্তি প্রশাসনে ত্বদবীর বানিজ্য করে চলছেন এমন নেত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন খুলনার পাপিয়া’দের সঙ্গীরা ।
রাজনৈতিক পরিচয়ে খুলনার পাপিয়ারা নানা ধরনের অপকর্ম করে অবৈধ টাকা উপার্জন এবং ক্ষমতার দাপট দেখানো খুলনার পাপিয়াদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে? এ ধরনের প্রশ্ন খোদ আওয়ামী লীগের খুলনা জেলা ও মহানগরের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের মাঝে উঠেছে। সম্প্রতি ঢাকায় র্যাবের হাতে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া গ্রেফতারের পর এ ধরনের প্রশ্ন তুলছেন পরীক্ষিত এ সকল নেতা-কর্মী। তারা বলেন, সারা জীবন দলের জন্য হামলা, মামলা ও নির্যাতন সহ্য করে কি পেয়েছি। বরং পাপিয়ারা সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা নিয়ে হাজার কোটি টাকা মালিক বনেছেন। সুবিধাজনক সময়ে শাসক দলের পতাকা তলে এসে এ ধরনের অখ্যাত নারী নেত্রীরা সুন্দরী যুবতী নিয়ে বিভিন্ন ত্বদবীর,ঠিকাদারী কাজ বাগিয়ে নেয়া,কাউকে কাজ পাইয়ে দিয়ে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়া,পুলিশ দিয়ে হয়রানী করাসহ বিভিন্ন অপরাধে জরিত নেত্রীদের উপর ফুঁসে উঠছে ক্ষমতাসীন দলের ক্ষতিগ্রস্থ নেতাকর্মীরা ।
খুলনার কয়েকটি আবাসিক এলাকা বিশেষ করে নিরালা,সোনাডাঙ্গা ১ম ফেজ ২য় ফেজ,টুটপাড়া,বয়রা,মুজগুন্নির কেডিএ আবাসিক,দৌলতপুরসহ বেশ কিছু এলাকার নারী নেত্রীদের ফ্লাটে,বাসা বাড়ি ও বিভিন্ন পার্টিতে সমাজপতিদের নিয়ে চলে আমোদ ফুর্তি । রাত গভীর হলে নেত্রীদের বাসাবাড়িতে দামী দামী গাড়ি আসা যাওয়া ছিলো নিত্য নৈমিত্যিক ব্যপার।অনেক নেত্রীর ফ্লাট বাড়িতে অসামাজিক কার্যকলাপসহ মাদকের রমরমা বাণিজ্যের অভিযোগ অনেক দিনের। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ওই সকল স্থানে অভিযানে গিয়ে অনেক সময় উপরি চাপে ফিরে এসেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত কয়েকজন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে জানান, অভিযানে গিয়ে সেখানে রাজনৈতিক পরিচয় বহনকারী অনেকের সাথে দেখা হয়। এতে বিব্রত হয়েই তারা ফিরে আসেন। নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউকে গ্রেফতার করায় ফলে খুলনার পাপিয়াদের দৌড়ঝাপ শুরু । ইতিমধ্যে গা ঢাকা দিয়েছেন অনেকে ।খুলনার পাপিয়াদের মোবাইল কললিষ্ট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সম্ভাব্য সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।
খুলনা মহানগর ও জেলায় বিভিন্ন অপকর্ম এবং ত্বদবীরবাজ নেত্রীদের কোন নির্দিষ্ট আয়ের উৎস না থাকলেও তাদের জীবন যাপন সম্পদই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে তাদের ক্ষমতার দাপট । এ সকল নারী নেত্রীরা দলের নাম ভাঙ্গিয়ে বনে গেছেন কোটি কোটি টাকা,হাই রাইজ বিল্ডিং,ভূসম্পদের মালিক নেত্রীরা হলেন,মহিলা আঃলীগ নেত্রী,যুব মহিলা লীগ,কৃষকলীগ,মানবাধিকার কর্মী,কথিত সংবাদ কর্মী,কিন্ডার গার্ডেন পরিচালকসহ কয়েকজন নারী জন প্রতিনিধির নাম রয়েছেন । অপকর্মে লিপ্ত নারী নেত্রীরা প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা,সিভিল প্রশাসন বড় বড় কর্তা ব্যক্তি ও আইনশৃংখলা বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তাদের বিছানা সঙ্গী হয়েছে কখনো সুন্দরী যুবতী মেয়ে বাসায় এনে তাদের মনোরঞ্জন করে রাতা রাতি বদলে যেয়ে বিলাসী জীবন যাপন করছেন । তাদের আয়ের সাথে ব্যায়ের কোন সদৃর্শ নেই । পাপিয়া গ্রেফতার হলেও খুলনার পাপিয়ারা রয়েছেন এখন ধরা ছোয়ার বাইরে । স্থানীয় আঃলীগ ও সহযোগী সংগঠনের তৃর্নমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা হাইব্রিড এসব মক্ষারানী খ্যাত নারী নেত্রীদের গ্রেফতার করার দাবী জানাচ্ছে ।
এদিকে গত মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাপিয়ার বিষয়ে জানতেন। তিনিই পাপিয়াকে গ্রেফতার করতে এবং তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মহাখালীর সেতু ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে অসামাজিক কার্যকলাপসহ নানা অপকর্মের দায়ে র্যাবের হাতে গ্রেফতার নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউকে সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। গত ২৩ ফেব্র“য়ারি যুব মহিলা লীগের সভাপতি অধ্যাপিকা অপু উকিল ও সাধারণ সম্পাদক নাজমা আকতার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এই তথ্য জানানো হয়।
উল্লেখ্য, দেশত্যাগের সময় গত ২২ ফেব্র“য়ারি সকালে বিমানবন্দর থেকে তিন সহযোগীসহ পাপিয়াকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর গুলশানের পাঁচ তারকা হোটেল ওয়েস্টিন থেকে চার নারীকে আটক করা হয়। র্যাব জানায়, মোটা অঙ্কের টাকায় তাদের দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কাজ করিয়ে আসছিলেন পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন। এরপর পাপিয়ার ঢাকাস্থ ফ্লাটে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, গুলি, বিপুল পরিমাণ টাকা, বিদেশী টাকা, জাল টাকা ও মাদক উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে পাপিয়া ও তার স্বামী ১৫ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পাপিয়ার মুঠোফোন থেকে বেশ কিছু আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও জব্দ করেছে। যাতে ব্যবসায়ী, আমলা, রাজনৈতিক নেতা ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক এ প্রতিবেদককে বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। খুলনা মহানগরীতে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রথমে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা, তারপর আইনে সোপর্দ করা হবে।