চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখুলনায় আলোচিত মহিদুল ইসলাম (২৭) হত্যা মামলার প্রধান আসামী সুমন ও মূল পরিকল্পনাকারি আকাশকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬ এর সদস্যরা।সোমবার (০৭ অক্টোবর) সকালে প্রথমে ঢাকা থেকে সুমনকে পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ি খুলনা থেকে আকাশ ও তার সহযোগী লালচাঁনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় হত্যা কাজে ব্যবহৃত ছুরি ও রক্তাক্ত জামা কাপড় উদ্ধার করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মহানগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরিত পাশে সুজুকি শোরুমের সামনে প্রকাশ্যে দিবালোকে মহিদুলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে বুধবার রাতে নিহতের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম বাদি হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
র্যাব জানায়, চলতি বছরের আগস্ট মাসে গল্লামারী পার্কের সামনে মহিদুল এবং তার সহযোগীরা এলাকায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাসুমকে লোহার পাইপ দিয়ে বেধড়ক মারপিট করে। এর জের ধরে মাসুম প্রতিশোধ নেয়ার জন্য সুযোগ খুজঁতে থাকে। ঘটনার ১৫ দিন আগে সুমন, মাসুম, আশিক ও আকাশ মহিদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ৪টার দিকে সুমন, মাসুম ও আশিকসহ আরো কয়েকজন গল্লামারী ফুয়েল পাম্পের আশে-পাশে হত্যার নিমিত্তে অবস্থান নেয়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আকাশ মহিদুলকে নিয়ে পায়ে হেটে সোনাডাঙ্গা থানাধীন গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে পৌঁছায়। এর কিছুক্ষন পর আকাশ ঘটনাস্থল থেকে অন্যত্র চলে যায়। আকাশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর সুমন, মাসুম ও আশিক অতর্কিতভাবে ছুরি ও চাপাতি দিয়ে মহিদুলকে এলোপাথাড়িভাবে কুপিয়ে আঘাত করে। এক পর্যায়ে মহিদুল রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় পড়ে গেলে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন মহিদুলকে খুলনা মেডিকেলে নেয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ঘটনার পর মাসুম ও সুমন কমিশনারের গলিতে মাসুমের বন্ধু জনৈক লালচাঁনের বাসায় রক্তাক্ত জামা পরিবর্তন করে ও হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি তার বাসায় রেখে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। ঘটনার পর থেকে র্যাব-৬ এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতার করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে। এরই অংশ হিসেবে এই মামলার প্রধান আসামী সুমনকে ঢাকা হতে এবং মহিদুল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী আকাশ ও সুমনের সহযোগী লালচাঁনকে খুলনা থেকে গ্রেফতার করে। এছাড়াও লালচাঁনের বাসা থেকে হত্যা কাজে ব্যবহৃত ছুরি ও রক্তাক্ত জামা কাপড় উদ্ধার করা হয়।
সুমনের স্বীকারোক্তি মতে জানা যায় যে, মহিদুল হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল মহিদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আকাশ। তারই পরিকল্পনা মতে সুমন, মাসুম ও আশিকসহ আরও অনেকে এই হত্যাকান্ড ঘটায়। সুমনের নামে মাদক এবং আকাশের নামে হত্যা এবং নারী ও শিশু নির্যাতনসহ একাধিক মামলা রয়েছে। উদ্ধারকৃত আলামতসহ আসামীদের খুলনা মহনগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম চলছে।