চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখুলনায় শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার প্রথম দিনে অতিবাহিত হয়েছে। তবে কেন্দ্রে অনুপস্থিত ছিল ৮৪৩ জন। গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দিনে জেএসসি’র বাংলা এবং জেডিসি’র কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ১১ নভেম্বর জেএসসি ও ১৩ নভেম্বর জেডিসি পরীক্ষা শেষ হবে।
জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য মতে, খুলনায় এ বছর জেএসসি ও জেডিসি’র ৭০টি কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিল ৩৪ হাজার ৪৪৪ জন। এর মধ্যে জেএসসিতে ছিল ২৯ হাজার ৭৩৮ জন এবং জেডিসিতে ৪ হাজার ৭০৬ জন। তবে জেএসসিতে ২৯ হাজার ২২৮ জন এবং জেডিসিতে ৪ হাজার ৩৩৭ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়।
পাইকগাছায় জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার ১৩টি কেন্দ্র ও ভেন্যু কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৪ হাজার ৪২০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম দিন ১৫৮ পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬৩৬ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১০ জন, সমাজসেবা কর্মকর্তা সরদার আলী আহসান জানান, পাইকগাছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩৮৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৩, ইন্সট্রাক্টর রনজিৎ কুমার মিস্ত্রী জানান, কপিলমুনি সহচরী বিদ্যমন্দির কেন্দ্রে ৩৭১ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৭, সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা ইকবাল কবির জানান, কপিলমুনি মেহেরুন্নেছা বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩০৭ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৫, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, রাড়–লী আরকেবিকে হরিশ্চন্দ্র ইনস্টিটিউট ও রাড়–লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭৭১ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১৫, সহকারী পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা রুহুল আমিন জানান, গড়ইখালী শহিদ আয়ুব ও মুছা মেমোরিয়াল ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্র ৫০১ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৬, একাডেমীক সুপার ভাইজার মীর নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, গড়ইখালী আলমশাহী ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে ২৫১ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৪, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মির্জা মিজানুর রহমান জানান, চাঁদখালী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪১৭ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১৪, অধ্যক্ষ আজাহার আলী জানান, পাইকগাছা আলিম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৩৩১ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৩৪, সহকারী শিক্ষা অফিসার আছাদুজ্জামান জানান, হাবিবনগর সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে ৩০৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৪০, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মোজাফ্ফর হোসেন জানান, কে ডি সাহাপাড়া ভোকেশনাল কেন্দ্রে ৯০ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১০, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, পিটিডি সুন্দরবন টেকনিক্যাল ভোকেশনাল কেন্দ্রে ৫৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১০ পরীক্ষার্থী। এদিকে প্রথম দিনের পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুলিয়া সুকায়না।
এদিকে মোড়েলগঞ্জে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার প্রথম দিন গতকাল শনিবার এক ছাত্র বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রতারণার আশ্রয়ে একাধিক উত্তরপত্র সংগ্রহের দায়ে আবুজার নামে জেডিসি’র ওই পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেন কর্তৃপক্ষ। আবুজার আমতলী কামিল মাদ্রাসার ছাত্র। জেডিসি’র মোড়েলগঞ্জ সদরের ১নং কেন্দ্রের ৫নং কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিল সে। কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ ফখরুল ইসলাম বলেন, অসদুপায় অবলম্বন ও কেন্দ্রের শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আবুজারকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
যশোর : বাংলা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গতকাল শনিবার শুরু হয়েছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট-জেএসসি পরীক্ষা। যশোর শিক্ষা বোর্ড থেকে এ বছর ২ হাজার ৮২৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ছাত্র ১ লাখ ১৩ হাজার ৬৭৭ ও ছাত্রী ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৩৭ জন। যা গত বছরের তুলনায় ২ হাজার ৬৯২ জন বেশি।
যশোর শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেএসসি পরীক্ষায় যশোর জেলা থেকে ৩৭ হাজার ১৮৪ জন, নড়াইল জেলা থেকে ১২ হাজার ৫৭৬ জন, ঝিনাইদহ জেলা থেকে ২৯ হাজার ৩৩৭ জন, মাগুরা জেলা থেকে ১৫ হাজার ৭৩৭ জন, সাতক্ষীরা থেকে ২৬ হাজার ৫৪ জন, খুলনা থেকে ৩২ হাজার ১৯১ জন, বাগেরহাট থেকে ১৯ হাজার ২৯২ জন, কুষ্টিয়া থেকে ৩৬ হাজার ৩৯৯ জন, চুয়াডাঙ্গা থেকে ১৭ হাজার ৭১৯জন ও মেহেরপুর জেলা থেকে ১২ হাজার ২৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল আলীম জানিয়েছেন, খুলনা বিভাগের ২৮৩টি কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে জেএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। গত বছরের তুলনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যাও বেড়েছে। সেই সাথে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে গ্রহণ করতে বোর্ডের ভিজিলেন্স টিমের পাশাপাশি কেন্দ্রগুলোতে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।