চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আয়া নার্গিস এবং গোপালগঞ্জ থেকে আসা মোহাম্মদ আলম মোল্লা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে গত সোমবার। এর আগে খুলনায় ২৬ জন মিলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ২৮ জনে। চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী ডেঙ্গুর প্রভাব শেষ হয়ে যাওয়ার কথা আরও অন্তত দেড় মাস আগে। অথচ এখনও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৮ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছে, এডিস এলবোপিকটাস নামে এক ধরনের এডিস মশা গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছিলো। তাই গ্রামাঞ্চল থেকে এখনও পুরোপুরি ডেঙ্গু রোগী নিঃশেষ হয়ে যায়নি। সারা বছরই কমবেশি ডেঙ্গু রোগীর দেখা মিলবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়েছে। চলতি মাসের শেষ দিকে আক্রান্ত নতুন রোগী ভর্তির সংখ্যা একটু কমে আসলেও গতকাল পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিল ৮ জন। এরা সবাই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তবে এবার মৌসুমের পরও ডেঙ্গুর প্রকোপ রয়েছে। পাশাপাশি এখনও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। বিশ্লেষকদের হিসাব মতে খুলনায় সেপ্টেম্বরের পর ডেঙ্গুর মৌসুম না থাকলেও চলতি মাসেই মারা গেছে চারজন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, এডিস মশা দুই ধরনের। শহরে যে ধরনের মশা থাকে তাদের এডিস এজিপটি বলে। এসব মশা সাধারণত বৃষ্টির পানি ও জমে থাকা পানিতে বংশ বিস্তার করে। সেই সব মশা এখন নেই তেমন একটা। তবে অন্য এক প্রকার এডিস মশা এলবোপিকটাস যা গ্রামে বংশ বিস্তার করে। এ সকল মশা ইতোমধ্যে গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সাতক্ষীরা, যশোর ও এর আশ-পাশের এলাকায় ডেঙ্গুর সম্ভাবনা বেশি। ফলে এবার শীতে এমনকি সারা বছরই ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
খুলনার সিভিল সার্জন ডাঃ এস এম আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ডেঙ্গু নিয়ে প্রচলিত যত ধারণা সব এবার পাল্টে গেল। প্রতি বছর এ সময় শীতের আমেজ থাকলেও এবার নভেম্বরেও বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টির পানি যেখানে জমে থাকবে সেখানেও এডিস মশা ডিম পাড়ার সম্ভাবনা থাকবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। কোন কিছুর সংকট নেই। এখন থেকে বছর জুড়ে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হবে।