দেশীয় তৈরী ২টি ওয়ান শুটার গান ও মোটরসাইকেলসহ আব্দুল বাছেদ বিকুল (২৭) ও সোলাইমান ইকবাল ইশান (২১) নামে ২ জনকে আটক করেছে কেএমপি’র সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশ। সোমবার (৮ এপ্রিল) হাফিজনগর এলাকায় চেকপোস্ট থেকে আটক করা হয় তাদের।
আটককৃত আব্দুল বাছেদ বিকুল দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুল আউয়ালের ছেলে ও সোলাইমান ইকবাল ইশান বরুড়া থানার বাকসার গ্রামের ইকবাল হোসেনের ছেলে ।
কেএমপি’র এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ৭ এপ্রিল দিবাগত রাত অর্থাৎ ৮ এপ্রিল সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম হাফিজনগর এলাকায় চেকপোস্ট ডিউটি করা কালে রাত অনুমান সাড়ে ৩টায় মোটরসাইকেল যোগে আসা দুইজন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে থামিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে। আগত দুইজন ব্যক্তির সন্দেহজনক এবং অসংলগ্ন কথাবার্তা বলায় পুলিশ সন্দেহ হওয়ায় তাদের দেহ তল্লাশি করে। তল্লাশিকালে আব্দুল বাছেদ বিকুল ও সোলাইমান ইকবাল ইশান এর হেফাজতে থাকা ২ টি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটার গান উদ্ধারপূর্বক তাদেরকে আটক করে। এসময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ এবং আটককৃতদের পিসিপিআর যাচাই করে জানা যায় যে, আব্দুল বাছেদ বিকুল খুলনা মহানগরীর শীর্ষ সন্ত্রাসী নূর আজিম গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড এবং সোলায়মান ইকবাল ইশান একই গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। বহনকৃত অবৈধ অস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ব্যবহারের জন্য তারা নিজেদের হেফাজতে রেখেছিল। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, মারামারি ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত একাধিক মামলা এবং অভিযোগ রয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, আব্দুল বাছেদ বিকুল খুলনা মহানগরীতে অবস্থান করে এলাকার সমস্ত তথ্য গ্রুপের কাছে প্রেরণ করে ও নূর আজিমের নির্দেশনা মোতাবেক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে। তার কোন নির্দিষ্ট পেশা নাই। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে মূলত সে জীবিকা নির্বাহ করে। ব্যক্তিগত জীবনে সে বিবাহিত। বিকুলের স্ত্রী স্বর্ণা তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সহযোগী, কিছুদিন আগে একটি চাঁদাবাজি মামলায় তার স্ত্রী কে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বাবা ও একজন মাদক ব্যবসায়ী। বিকুলের পরিবার মূলত প্রথম দিকে মাছ ব্যবসার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করলেও পরবর্তীতে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে।
অপর সোলাইমান ইকবাল ইশানের জন্ম এবং বেড়ে উঠা কুমিল্লায়। তারা পিতা একজন পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী। মাদক সংশ্লিষ্ট ব্যপারে বিকুলের সাথে সোলাইমান ইকবাল ইশানের পরিচয় হয় এবং পরবর্তীতে সে বিকুলের হাত ধরে একই গ্রুপে প্রবেশ করে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, পুলিশ রিমান্ডে এনে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করে অবৈধ অস্ত্রের উৎস, অস্ত্র সরবরাহে কারা জড়িত, কোথায় ব্যবহার করার পরিকল্পনা ছিলো তার রহস্য উদঘাটন করে এই প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত আছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আসন্ন ঈদসহ সামনের দিন গুলোতে খুলনা মহানগরীর নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।