চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃনতুন বিধি অনুযায়ী দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) খুলনার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে ১৪টি মামলা হয়েছে। সরকারি টাকা আত্মসাৎ, ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বড় বড় রাঘববোয়ালদের আসামি করে মামলাগুলো করেছে দুদক।
আসামিদের মধ্যে আছেন- গ্রামীণ ব্যাংকের সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর শাখার সাবেক সিনিয়র কেন্দ্র ব্যবস্থাপক কেএম মশিউর রহমান, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তওহিদুর রহমান, মেসার্স লস্কর ট্রেডার্সের মালিক জুনায়েদ হোসেন, মেসার্স গাফফার ফুডের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর আরিফ গাফফার, মেসার্স আরা এন্টারপ্রাইজের সৈয়দ আশরাফুল করিম, সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার শেখ মুজিবর রহমান, সিনিয়র অফিসার শেখ মাহফুজুর রহমান, সাবেক কর কমিশনার মো. মেজবাহ উদ্দীন, স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. শেখ শাহজাহান আলী, মোংলা বন্দরের ভাণ্ডারী সেলিম রেজা ও এসএম সিরাজুল ইসলাম, খালিশপুর জুট মিলের প্রকল্প প্রধান মো. মোস্তফা কামাল, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার পার্থ প্রতিম মুখার্জি, ডুমুরিয়া উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ইলিয়াস হোসেন।
দুদক আইনের সংশোধিত বিধিমালার গেজেট গত বছরের জুন মাসে প্রকাশ করা হয়। এর পরই পুরনো বিধির কার্যকারিতা স্থগিত হয়ে যায়। যার ফলে দুর্নীতির যে কোনো অভিযোগের মামলা প্রতিষ্ঠানটির নিজ দফতরে করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে দুদকের ২২ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা শুরু হয়।
যার পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ৯ জুলাই গ্রামীণ ব্যাংকে এক লাখ ৬৯ হাজার ৯০০ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় কেএম মশিউর রহমান, একই দিনে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ১৬ কোটি ৬১ লাখ ৩১ হাজার ৮২৭ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তওহিদুর রহমান, স্টোর কিপার একেএম ফজলুল হক, হিসাবরক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন, মেসার্স বেঙ্গল সায়েন্টিফিক কোম্পানির মালিক ব্যবসায়ী জাহের উদ্দিন সরকার, আবদুস ছাত্তার সরকার, আসাদুর রহমান, কাজী আবু বকর উদ্দিন এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশলের সাবেক সহকারী প্রকৌশলী আবদুল কুদ্দুসের নামে মামলা হয়।
সোনালী ব্যাংক বাগেরহাট শাখার এক কোটি এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতির ঘটনায় শেখ মুজিবর রহমান ও মাহফুজুর রহমান, কর অফিস খুলনার তিন কোটি ৪৭ লাখ ৩৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ ঘটনায় মেজবাহ উদ্দীন, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছয় কোটি ছয় লাখ টাকা আত্মসাৎ ঘটনায় শেখ শাহজাহান আলী, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ১৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ ঘটনায় সেলিম রেজা এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় এসএম সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এ ছাড়া ঘুষ নেয়ার ঘটনায় খালিশপুর জুট মিলের কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল, শ্যামনগর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার পার্থ প্রতিম মুখার্জি, ডুমুরিয়া উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মো. ইলিয়াস হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
জানতে চাইলে দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক নাজমুল হাসান বলেন, নতুন বিধিমালা অনুযায়ী খুলনাতেই এখন পর্যন্ত ১৪টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক সরকারি কর্মকর্তা ঘুষসহ হাতেনাতে আটক হওয়ার ঘটনা রয়েছে। এছাড়া কাজ করে বিল উঠানো, ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের মতো একাধিক ঘটনা আছে। তিনি বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ছাড় দেয়া হবে না।