করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সারাদেশের মতো খুলনাও আশংকাজনক হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এ পরিস্থিতিতে করোনা রোগীদের অক্সিজেন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
সংক্রমনের এক বছরেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও হাসপাতালটিতে এখনও স্থাপন করা সম্ভব হয়নি অক্সিজেন প্লান্ট। নির্ধারিত অক্সিজেন প্লান্টটি খুমেকের অদূরে অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এ নিয়ে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের চিকিৎসকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। আর দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে সাধারণ রোগীদের।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর গড়িমসি ও অবহেলার কারণে স্থাপন হচ্ছে না প্লান্টটি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসক নেতারা। হাসপাতালে বর্তমানে লিকুইড (তরল) অক্সিজেন প্লান্ট থেকে ৩৬ জনকে সেবা দেয়ার কথা থাকলেও সক্ষমতা নিয়ে আছে প্রশ্ন। অথচ এই সক্ষমতা দ্বিগুন করতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয়া হয় গত নয় মাস পূর্বে। আইসিইউ তে ভেন্টিলেটরের সংখ্যা ১০ টি হলেও সচল মাত্র ৪ টি রয়েছে। বাকি ৬ টি ভেন্টিলেটর ও ১৪ টি হাই ফ্লু নজেল অচল রয়েছে। যা কবে নাগাদ সচল হতে পারে তা জানা নেই সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের । অপর্যাপ্ত রয়েছে ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, গত মার্চ মাসে পূর্বের তুলনায় সংক্রমনের হার বেড়েছে ১৪ শতাংশ। গত ২৪ মার্চ থেকে আজ শনিবার পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৭ জন। এছাড়া আইসিইউতে শয্যা সংখ্যা রয়েছে ১০ টি, যা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। প্রতিদিন আনুপাতিক হারে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়ছে না শয্যা সংখ্যা। এ নিয়ে বিপাকে চিকিৎসকরা। ফলে করোনা রোগীর চিকিৎসায় ভোগান্তি বাড়ছে।
উল্লেখ্য, খুলনা কোভিড-১৯ (করোনা ভাইরাসের) সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধের লক্ষ্যে গত ২৪ মার্চ (বুধবার) সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য গঠিত কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনসহ বেশ কয়েকটি জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানান, ভর্তি রোগীদের অধিকাংশেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হয়। কিন্তু এত রোগীকে একসঙ্গে সিলিন্ডারে অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হয় না। লিকুইড (তরল) অক্সিজেন প্লান্ট না থাকায় নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে পড়ছেন করোনায় আক্রান্ত রোগীরা।
করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা কমিটির খুলনার সমন্বয়কারী ডাঃ মেহেদী নেওয়াজ চ্যানেল খুলনা কে জানান, করোনা হাসপাতালে অক্সিজেন সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে, যা ধীরে ধীরে আরো প্রকট হচ্ছে। অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন না হওয়ায় দুঃশ্চিন্তায় সময় পার করছেন চিকিৎসকরা। তিনি আরো বলেন, শুধুমাত্র কয়েকটি দপ্তরের সমন্বয়হীনতা ও অবহেলার কারণে এই প্লান্টটি স্থাপন হয়নি এবং নির্ধারিত প্লান্টটি চরম অবহেলায় রয়েছে। খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে বিষয়টি জানালে তিনি খুব শীঘ্রই প্লান্ট স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন।