চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলের সর্বশেষ সাইরেন বাজে ২০০২ সালের ৩০ নভেম্বর। এ সময় হাজার হাজার শ্রমিকের চোখের পানি ঝরিয়ে বন্ধ হয় মিলটি। এরপর আশা আর প্রতিশ্র“তির মধ্যদিয়ে কেটে গেছে আরও ১৭টি বছর। গত ৩০ নভেম্বর মিলটি বন্ধের ১৫টি বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু মিলটি চালুর প্রতিশ্র“তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন যাবত বন্ধ থাকা খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস্ লিমিটেডের স্থানে টিএসপি সার কারখানা নির্মাণে উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। তিনি গতকাল রবিবার মিলটি পরিদর্শনের সময় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এই আশ^াস দেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশে টিএসপি সারের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কারখানা রয়েছে মাত্র একটি। অন্যদিকে শিল্পনগরী হিসেবে খুলনার একটি ঐতিহ্য রয়েছে। এখানে টিএসপি সার কারখানা নির্মিত হলে সেটি দেশের চাহিদা যেমন মিটাবে তেমনি এই এলাকার অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও হবে।
এর আগে প্রতিমন্ত্রী খুলনার শিরোমনি সারের গোডাউন এবং রূপসা নদীর তীরে বিভিন্ন ঘাট পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে সার গ্রহণ, মজুদ, সরবরাহ ও বিতরণ ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তিনি। এ সময় প্রতিমন্ত্রী খুলনাতে সারের পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। একই সাথে সার সংরক্ষণ ব্যবস্থা বা অন্য কোন কারণে যেন সার অপচয় না হয় এবং কৃষকরা যেন সময়মতো সার হাতে পান তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
খুলনার বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনকালে প্রতিমন্ত্রীর সাথে ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিসিআইসির চেয়ারম্যান মোঃ হাইয়ুল কাইয়ুম, পরিচালক (বাণিজ্যিক) মোঃ আমিনুল আহসানসহ বিসিআইসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
মিল সূত্রে জানা গেছে, নগরীর খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের ভৈরব নদীর তীরে ৮৭ দশমিক ৬১ একর জমির ওপর ১৯৫৯ সালে স্থাপিত হয় খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল। এর মধ্যে ৩৪ দশমিক ৪৩ একর জমিতে মূল মিল অবস্থিত। বাকী প্রায় ৫৩ একর জমিতে খুলনা নিউজপ্রিন্ট স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, কর্মকর্তাদের আবাসিক এলাকা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের কোয়াটার, খেলার মাঠ, বিনোদন কেন্দ্রসহ অন্যান্য স্থাপনা ছিল। এরমধ্যে ৫০ একর জমি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বিক্রি করেছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। ওই জমিতে ৪০০ মেগাওয়াট করে ২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য কাজ চলছে। জমিতে থাকা স্থাপনা ও গাছ কাটার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আর বাকী মিল এলাকার জমিতে ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন কাগজ কল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তবে সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি।
প্রতিমন্ত্রী গতকাল দুপুর ১টায় শিরোমনি বাফার গোডাউন পরিদর্শনকালে তার সাথে ছিলেন মহাব্যবস্থাপক (বিপনন) মোঃ মঞ্জুর রেজা, উপ-মহাব্যবস্থাপক (প্রসাশন) সাহিনুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) শেখ তৌহিদুল ইসলাম, ডিপো ইনচার্জ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।