করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাংবাদিক ছাঁটাই, বিনা বেতনে বাধ্যতামূলক ছুটি ও বেআইনীভাবে বেতন হ্রাস কিংবা বেতন হ্রাসের পাঁয়তারা চালানো ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) নির্বাহী কমিটি। রোববার নির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান অনৈতিক পথে পা রাখছেন। তারা সাংবাদিক ছাঁটাইয়ের নামে সমাজের নৈরাজ্যকর পরিবেশ তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। এই নৈরাজ্যকর অবস্থা যেকোন মূল্যে প্রতিরোধ করবে ডিইউজে। তিনি চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে উৎসবভাতা পরিশোধের দাবি জানান। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের রাজপথে নামার আগেই বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে হবে।
প্রারম্বিক বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, কোনও ধরনের ঘোষণা ছাড়া দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্টসহ কয়েকটি পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কালের কন্ঠে গণছাঁটাই চলছে, বাংলাদেশের খবর, নিউ নেশন, এশিয়ান এইজ, মানবজমিন পত্রিকায় বেতন হ্রাসসহ ছাঁটাই ও বাধ্যতামূলক ছুটি দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। যা প্রচলিত আইনের প্রতি বৃদ্ধাগুলি প্রদর্শনের নামান্তর।
সভায় বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সহ-সভাপতি এম এ কুদ্দুস, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জিহাদুর রহমান জিহাদ, প্রচার সম্পাদক আছাদুজ্জামান, ক্রীড়া সম্পাদক দুলাল খান, জনকল্যাণ সম্পাদক সোহেলী চৌধুরী, দফতর সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী, নির্বাহী সদস্য শাহনাজ পারভীন এলিস, রাজু হামিদ, সলিমুল্লাহ সেলিম, নিউনেশন ইউনিট প্রধান হেমায়েত হোসেন, দৈনিক জনতার ডেপুটি ইউনিট প্রধান জাহাঙ্গীর খান বাবু।
এদিকে গতকালের এই বৈঠকে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলমকে আহবায়ক করে ৫ সদস্যের ওয়েজবোর্ড মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটি ঢাকা থেকে প্রকাশিত সরকারি বিজ্ঞাপন সুবিধাভোগী পত্রিকাগুলোর সার্বিক বিষয় মূল্যায়ন করে রিপোর্ট পেশ করবে।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, জীবিকা ধংসের এ ধরনের হীনষড়যন্ত্র মূলত সমাজের অস্থিরতা তৈরির অপকৌশল। শিল্পে ও সমাজে অস্থিরতা তৈরির দায় মালিকেই নিতে হবে। ডিইউজে নেতৃবৃন্দ মনে করেন- বর্তমান পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের চাকরি সুরক্ষাসহ গণমাধ্যম শিল্প রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। অবিলম্বে, সরকারের নেতৃত্বে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান ডিইউজে নেতারা।
সভায় করোনা দূর্যোগে অস্বচ্ছল সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ানোয় তথ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়। নেতারা বলেন, করোনাভাইরাসের মত ভয়ঙ্কর সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা কোনও ধরনের সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়া কেবলমাত্র পেশাগত দায়িত্ববোধ, প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম বৃদ্ধি ও সাধারণ মানুষের তথ্য চাহিদা পূরণের কথা ভেবে শত ঝুঁকির মধ্যেও কাজ করছেন। অথচ, নানা অযুহাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব পেশাদার সাহসী সংবাদকর্মীদের বেতন কমিয়ে দেয়ার কিংবা বিনা বেতনে বাধ্যতামূলক ছুটি জারির অপতৎপরতা চালাচ্ছে। ডিইউজে নেতারা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, গণমাধ্যম মালিকেরা তাদের হীন পাঁয়তারা অবিলম্বে বন্ধ না করলে প্রয়োজনে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে কঠিন কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে।