একসময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হলেও, বর্তমান বিশ্বে দেশটি উন্নয়নের রোল মডেল। গবেষণা জাহাজ নির্মাণ স্বাধীন বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রমাণ। খুলনা শিপইয়ার্ড লিঃ কর্তৃক বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য নির্মিত ইলিশ গবেষণা জাহাজ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এসব কথা বলেন।
আজ (মঙ্গলবার) বিকালে খুলনা শিপয়ার্ড লিঃ এর চত্বরে আয়োজিত জাহাজ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেন, বিশে^ মাত্র ১১টি দেশে ইলিশ উৎপাদন করে, যার মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে। মোট উৎপাদনের ৮০ শতাংশই আমরা উৎপাদন করি। ফলে ইতোমধ্যে ইলিশ বাংলাদেশের ভৌগলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। ইলিশের জীবন বৈচিত্রময় উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, ইলিশের জন্ম হয় মিঠা পানিতে, জীবনের বড় একটি অংশ কাটে সমুদ্রের লোনা পানিতে, আবার প্রজনন মৌসুমে ডিম ছাড়ার জন্য মিঠা পানিতে চলে আসে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ইলিশের জীবনচক্রে নানা পরিবর্তন এসেছে। এসব বিষয়ে গবেষণার জন্য এতদিন কোন জাহাজ ছিলো না। এই জাহাজ ইলিশ তথা মৎস্য গবেষণার নতুন দুয়ার উন্মোচন করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। একই সাথে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটকে এই আধুনিক জাহাজটি যথাযথ রক্ষণাবেক্ষনের মাধ্যমে ব্যবহার করে ইলিশ উৎপাদনে কার্যকারী ভূমিকা রাখার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী এবং বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ। স্বাগত জানান খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর খন্দকার আক্তার হোসেন। এসময় খুলনা নেভাল এরিয়ার কমান্ডার রিয়ার এডমিরাল এম আনোয়ার হোসেন, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ইসমাইল হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং খুলনা শিপইয়ার্ড লিঃ এর সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য এম ভি বিএফআরআই গবেষণা তরী নামের এই ফিশারিজ ভেসেলের দৈর্ঘ্য ২৫ মিটার, প্রস্থ ৬ মিটার, গভীরতা ২.৮০ মিটার, ড্রাফট ১.৪০ মিটার, ডিসপ্লেসমেন্ট ৯০ মেট্রিক টন, সর্বোচ্চ গতি ১০ নটিক্যালমাইল, হাল ম্যাটেরিয়াল-স্টীল এবং এ্যালুমিনিয়ামের তৈরি। জাহাজটির বিশেষত্ব হচ্ছে এর অভ্যন্তরে একটি অত্যাধুনিক ইলিশ গবেষণা ল্যাবরেটরি রয়েছে।