চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃগুনে গুনে ঘুষের টাকা নেওয়ার ভিডিও ভাইরালসহ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার আলোচিত সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়েছে।এ ঘটনায় অন্য অভিযুক্তরা হলেন- সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের মহরার আবদুস সালাম, নকলনবিশ সুমন আহম্মেদ ও দৈনিক মজুরি চুক্তির অফিস সহায়ক আনিছুর রহমান।
দলিল গ্রহীতা ও জমিদাতাদের নানা সমস্যায় ফেলে অবাধে ঘুষ নেওয়া, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধিতে সহায়তা, জমির প্রকৃত মূল্য কম দেখিয়ে রাজস্ব ফাঁকি, অসাধু দলিল লেখকদের সঙ্গে ঘুষের টাকা ভাগবাটোয়ারা, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়াই দলিল সম্পাদন বন্ধ রেখে সরকারি অফিসে সংবাদ সম্মেলন এবং সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগ রয়েছে ওই চারজনের বিরুদ্ধে। তদন্তে এ সকল অভিযোগের সত্যতা ও প্রমাণ মিললে সাময়িক বরখাস্তসহ ওই চারজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২৮ আগস্ট ঘুষের টাকা গুনে গুনে নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, ভুক্তভোগীর লিখিত অভিযোগ ও গণমাধ্যমে এসবের খবর প্রচার হতে দেখে জেলা রেজিস্ট্রার বিষয়টির তদন্ত শুরু করেন। মোট আট কর্মদিবসের তদন্তে সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসসহ কর্মচারীরা অভিযুক্ত হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে জেলা রেজিস্ট্রার এমন সুপারিশ করেন। গত রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সাময়িক বরখাস্তের সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন ঢাকায় ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিস্ট্রারের (আইজিআর) কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাসসহ ওই চারজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আইজিআর কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী সোমবার সশরীরে আমাকেও আইজিআর কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। এদিন হয়তো চূড়ান্ত কোনো নির্দেশনাও দেওয়া হতে পারে।
এ দিকে, গোপন খবরের ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন আইজিআর কার্যালয়ে প্রেরণের বিষয়টি জানতে পেরে সাময়িক বরখাস্তসহ বিভাগীয় শাস্তি ঠেকাতে সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাস কৌশলে ছুটির জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। গত ১৫ আগস্ট ঘুষ গ্রহণের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরবর্তীতে গত ১ সেপ্টেম্বর অফিস চলাকালীন সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাস ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়াই নিজ অফিসে সংবাদ সম্মেলন করেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার দাশের অভিমত, রেজিস্ট্রার অফিস থেকে অবৈধ সুবিধাবঞ্চিত কিছু দলিল লেখক তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছে।