তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বাচ্চা ছেলের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে অমানবিক শাস্তি দেওয়া হয়েছে শান্তা আক্তার (২৫) নামে এক মাকে। প্রথমে হাত-পা বেঁধে শারীরিক নির্যাতন, এর পর ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে করা হয় রক্তাক্ত জখম। এ ঘটনার তিন দিন পর মামলা নিয়েছে পুলিশ।
নির্যাতিত মা রোশেনা বেগম বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ওই মামলাটি করেন। মামলায় তিনজনকে নামীয় ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
এর আগে রোববার জেলা শহরের বিরাসার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে এ মামলায় রাতেই আলী মিয়া (৩৫) নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মামলার অন্য দুই আসামি হলো– হুমায়ূন মিয়া (৪০), রতন মিয়া (৫০)। বুধবার দুপুরে আসামি আলী মিয়াকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে চাচার নির্যাতনের শিকার হয়ে শান্তা আক্তার (২৫) নামে ওই গৃহবধূ এখন হাসপাতালের বিছানায় অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। শান্তা সদর উপজেলার শিলাউর গ্রামের রাসেল মিয়ার স্ত্রী।
জানা যায়, ঘটনার তিন দিন পর নির্যাতিত রোশেনা বেগম বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি মামলাটি করেন। মামলায় তিনজনকে নামীয় ও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করা হয়।
মামলাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মুজিবুর রহমান তদন্ত করছেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ওসি মো. আবদুর রহিম জানান, এ মামলায় একজন নামীয় আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি বাকি আসামিদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ, কয়েক মাস আগে শান্তার ছোট ছেলের সঙ্গে তার আপন চাচা হুমায়ূন মিয়ার ঝগড়া হয়। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটে। ওই ঘটনায় হুমায়ূনের বিরুদ্ধে মামলা করে শান্তার পরিবার।
মামলাটি তুলে নিতে চাপ দিয়ে আসছিলেন হুমায়ূন। এর জেরে রোববার সন্ধ্যায় শান্তা ডাক্তার দেখানোর জন্য আত্মীয়ের বাসা থেকে জেলা শহরে আসার সময় বিসারাস এলাকায় তার পথরোধ করেন হুমায়ূন ও তার সহযোগীরা।
পরে শান্তার হাত-পা বেঁধে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্লেড দিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করা হয় শান্তাকে। এ সময় শান্তার আর্তচিৎকার শুনে পরিবারের লোকজন ছুটে এলে হুমায়ূন ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
পরে তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শান্তার মা রোশেনা বেগম জানান, মারামারির ঘটনায় মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমায়ূন চাপ দিচ্ছিল। এর জের ধরে রাস্তায় শান্তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে ব্লেড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করেছে।