চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃখুলনাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে বর্তমান সরকার আন্তরিক । আর এই আন্তরিকতায় জন্য আওয়ামীলীগ ক্ষমতাসীন হয়ে এ অঞ্চলে একের পর এক মেঘা প্রকল্প গ্রহনের পাশাপাশী এবং বিভিন্ন সেক্টরে প্রায় কয়েকশত প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত উন্নয়নের ছোয়া ইতিমধ্যে পৌছেগেছে তৃর্নমুল স্তরে । সাধারন মানুষের জীবনমান উন্নতির পাশাপাশী বাড়ছে কর্মসংস্থান । কিন্ত সরকার প্রধান এই অঞ্চলের মানুষের প্রতি আন্তরিক হলেও উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্ধের সিংহভাগ অর্থ পকেটস্থ করছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র । এই সিন্ডিকেটের ফলে খুলনায় সরকারী উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যায় প্রতিযোগিতা মুলক হয়নি । খুলনায় শতশত কোটি টাকার দরপত্র নিয়ে দির্ঘদিন যাবত গুটিকয়েক ব্যাক্তিদ্বারা নিয়ন্ত্রিত । ঐসকল চিহৃিত টেন্ডারবাজ ব্যাক্তিদের বাইরে এ অঞ্চলে কোন টেন্ডার দাখিলতো দুরের কথা দরপত্রই ক্রয় করতে পারেনি সাধারন ঠিকাদাররা । খুলনা গণপূর্ত অধিদপ্তর ডিভিশন-১ ও ২ এর আওতাধীন যত কাজের দরপত্র আহবান করা হয়েছে তার সবই ঐ সিন্ডিকেট এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর ডিভিশন-১ ও ২ বর্তমান এবং সাবেক গুটিকয়েক কর্মকর্তার যোগসাজসে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভাগবাটোয়ারা নিয়েছেন । সিন্ডিকেট ৫ থেকে ১০কোটি টাকার কাজের ২০ থেকে ৩০ ভাগ অর্থ নিজেদের মধ্যে বন্টন করে নিয়েছেন । এবং বৃহত্ত প্রকল্পের কাজে ঐ সিন্ডিকেট গ্রেফতারকৃত টেন্ডার সম্রাট জিকে শামিমের হয়ে কাজ করছেন । এতে সহায়তা ও সমন্বয়ে করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন খুলনা গণপূর্ত অধিদপ্তর ডিভিশন-১ ও ২ এর বর্তমান ও সাবেক এবং বদলী হয়ে যাওয়া কর্মকর্তা,কর্মচারীগন । তাদের এই অবৈধ আয়ের উৎসই ছিলো টেন্ডারবাজদের সহায়তায় নির্দিষ্ঠ ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেয়া ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি), খুলনা ওয়াসার মেঘা প্রকল্প,খুলনা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, খুলনা গণপূর্ত অধিদপ্তর-১ ও ২, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় অধিদপ্তর (এলজিইডি),জনস্বাস্থ প্রকৌশল,ড্রেজার বিভাগ, ওজোপাডিকো,স্বাস্থ প্রকৌশল,হাসপাতাল নির্মান, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ খুলনার সরকারি-বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রায় সব প্রতিষ্ঠানের কাজের দরপত্র চিহৃিত ঐ টেন্ডারবাজ চক্রের দৌরাত্ম্য ছিলো চোখে পড়ার মত।সাধারন ঠিকাদারদের পক্ষথেকে বিভিন্ন সময় টেন্ডার সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়রি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হলেও কখনই কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলশ্রুতিতে টেন্ডারবাজরা রয়েছে বহাল তবিয়তে। তবে বড় বড় দাগের অধিকাংশ টেন্ডার সন্ত্রাসের নেপথ্যে কথিত গডফাদার ও রাঘব বোয়ালরা
জরিত থাকে বলে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয় না বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন (পিপিএ), ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর), ২০০৮ যথাযথভাবে অনুসরণ না হওয়ায় খুলনায় দরপত্র নিয়ে সিন্ডিকেট চক্রের দৌরাত্ম্য কখনো থেমে থাকেনা । ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে খুলনাঞ্চলের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের মান। সরকার প্রধান ঘুষ দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযানের কঠোর নির্দেশে দেয়া হয় । নির্দেশনায় বলা হয় ঘুষ দুর্নীতি,টেন্ডারবাজ,ক্লামের নামে ক্যাসিনো ব্যাবসায় জরিতব্যাক্তি যেহোক তাকে আইনের আওতায় বিচার করতে হবে । তার এই কঠোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠে নামে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা । প্রথমেই গ্রেফতার করা হয় যুবলীগ নেতাকে,এরপর কৃষকলীগনেতা,স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতির সফর বাতিলে বার্তা পৌছে যায় সারাদেশের ক্লাব পরিচালনার সাথে জরিত নেতাদের । গ্রেফতার আতংকে অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন । সম্প্রতি ঢাকায় টেন্ডার সম্রাট জিকে শামিম গ্রেফতার হওয়ায় টনক পড়ছে সারাদেশের টেন্ডারবাজ নেতাদের । একের পর এক গ্রেফতারে আতংক ছড়িয়ে পড়ে খুলনায় দরপত্র সিন্ডিকেট সদস্য ও খুলনায় আলোচিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের মাদকের পৃষ্ঠপোষক গডফার ও ভুমিদস্যু চক্র এবং দলের প্রভাবখাটিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া নেতা উপ নেতা,পাতিনেতা,ক্যাডার বাহিনীর মধ্যে । তারা ইতিমধ্যে নিজের বাঁচাতে দৌড়ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন বিভিন্ন মহলে । দেনদরবার করছেন চলমান সাড়াশী অভিযান থেকে রক্ষা পাওয়ার । শুধু টেন্ডারবাজ,মাদকের পৃষ্ঠপোষক,ভুমিদস্যুই নয় দৌড়ঝাপ শুরু করছেন পুলিশ বাহিনীর বির্তকিত সদস্য,বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের চিহৃিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা,কর্মচারী ও আলোচিত কর্মকর্তারা । এদের মধ্য রয়েছে কাস্টমস হাউজ,ভুমি অফিস,তহশীল অফিস, রেজিষ্ট্র ও সাব-রেজিষ্টার কার্যালয়,পাসপোট,বিআরটিএ,পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ ও ২, ,কর বিভাগ, খুলনা সিটি করপোরেশন, খুলনা ওয়াসার, বিদ্যুৎ, খুলনা গণপূর্ত অধিদপ্তর-১ ও ২, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় অধিদপ্তর (এলজিইডি),জনস্বাস্থ প্রকৌশল,ড্রেজার বিভাগ, ওজোপাডিকো,স্বাস্থ প্রকৌশল,হাসপাতাল, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগসহ খুলনার সরকারি-বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সেবাদান প্রায় প্রতিষ্ঠানের চিহৃিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিজেদের জ্ঞাত আয় বহিভুত সম্পদ রক্ষায় । ইতিমধ্যে খুলনার ক্লাব পাড়া নিয়ন্ত্রনকারী নেতারা লাপাত্তা হয়েছেন । চিহৃিত দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছুটি নিয়েছেন ,কেহ আবার চিকিৎসার কথা বলে পাড়ি দিয়েছেন বিদেশে । খুলনার আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা চিহৃিত ঐসকল টেন্ডারবাজ নেতা,ভুমিদস্যু,দুর্নীতিবাজ সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নজরদারীর আওতায় রয়েছেন বলে একটি সুত্র চিশ্চিত করেন । উচ্চ মহলের নির্দেশে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গই গ্রেফতার অভিযান শুরু হবে বলে ঐসুত্রটি জানায় ।
সূত্রটি আরো জানায়, খুলনা ওয়াসা, সিটি কর্পোরেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, গণপূর্ত, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ অন্য সংস্থা বা দপ্তরের ইতোপূর্বে টেন্ডার ঘটনায় যারা সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত ছিলেন তাদের রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরির করার পর প্রয়োজনীয় সুপারিশসহ ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে । তবে এ সকল কর্মকাণ্ডের সাথে যে রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ জড়িত রয়েছেন বলে জানাগেছে। এছাড়াও বিভিন্ন হত্যাকান্ডের সাথে প্রতক্ষ ও পরক্ষভাবে জরিত গডফাদার, অর্থদাতা, মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টেন্ডারের সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠানসমূহের নামও রয়েছে তালিকায়।