চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃকর্তব্যরত চিকিৎসকের দায়িত্বে অবহেলায় রাবেয়া খাতুন নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগ এনে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আরএমও এবং নার্সদের লাঞ্ছিত করেছে নিহতের স্বজনেরা। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ফিমেল মেডিসিন ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ধোপাখালী গ্রামের রাবেয়া খাতুন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন শনিবার সকালে জ্ঞান হারান তিনি। এ সময় চিকিৎসকেরা তার হৃৎস্পন্দন না পেলে তার স্বজনেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পরে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. শামীম কবিরকে লাঞ্ছিত করেন তারা।
নিহতের ছেলে তরিকুল ইসলামের অভিযোগ, তার মায়ের অবস্থা খারাপ হওয়ায় বারবার চিকিৎসকদের ডাকলেও তারা দ্রুত রোগীর কাছে আসেননি। এছাড়া রোগীকে দ্রুত অক্সিজেন দিতে বললে তারা এতেও অপারগতা প্রকাশ করে। এক পর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে তার মা রাবেয়া খাতুন। এ দিকে, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শামীম কবির জানান, রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন শুনে তিনি ওয়ার্ডে ছুটে যান। পরে রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন না পেয়ে তিনি ওই বৃদ্ধাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই ওই রোগীর ছেলে তরিকুলসহ বৃদ্ধার আরও কয়েকজন স্বজন তার উদ্দেশে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এ সময় নিহত ওই বৃদ্ধার স্বজনেরা তার জামার কলারও টেনে ধরেন। এভাবে টেনে-হেঁচড়ে তারা ওই চিকিৎসককে ওয়ার্ডের বাইরে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্স আছিয়া খাতুন ও শিউলী পারভীনকেও হেনস্থা করে তারা। পরবর্তীকালে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান দৈনিক অধিকারকে জানান, ঘটনার পরপরই তিনি হাসপাতালে পৌঁছান। পরে হাসপাতালের সবাইকে নিয়ে এক বৈঠকে ঘটনার তীব্র নিন্দা প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি অভিযুক্ত ওই চিকিৎসকের কাছ থেকে মুচলেকা আদায়ের মাধ্যমে সর্ব সম্মতিতে নিহতের মরদেহ তারা স্বজনদের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।