চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃ দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী সরকারি বিএল কলেজ। খুলনা নগরীর দৌলতপুর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে কলেজটিতে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর মিলিয়ে ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। কলেজটির প্রতিষ্ঠার পর থেকে নানা সংকট কাটিয়ে এখন সারা দেশেরই নজর কেড়েছে। কারণ কলেজটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক।
কলেজের পাঁচটি ছাত্রাবাসে আধিপত্য এবং মাদক সমস্যা এখনও প্রকট। পাশাপাশি কলেজে বহিরাগতদের প্রবেশে নিয়মিত সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা। কলেজের পূর্ব পাশের যমুনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড এবং পশ্চিমের বালু ব্যবসায়ের কারণে কোনো বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় বহিরাগতরা সহসাই কলেজে প্রবেশ করতে পারে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজের পার্শ্ববর্তী এলাকার লোকজন জোর করেই ছাত্রাবাসগুলোতে প্রবেশ করে এবং মাদক সেবন করে। সম্প্রতি বিভিন্ন ছাত্রাবাস থেকে ২০/৩০ জন বহিরাগতদের উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে কলেজের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রকাশ্যে ধূমপান বন্ধ, ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে মোটরসাইকেল নিয়ে প্রবেশ এবং রাজনৈতিক প্যানা-পোস্টার সাঁটানো বন্ধ করা হয়েছে। তারপরও বহিরাগতদের প্রবেশ ও ছাত্রাবাস নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসের মধ্যে অবস্থিত ড. জোহা ছাত্রাবাস, কবি নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাস, সুবোধ চন্দ্র ছাত্রাবাস, হাজী মো. মহসিন ছাত্রাবাস, শহীদ তিতুমীর ছাত্রাবাস। এছাড়া রয়েছে মেয়েদের জন্য বেগম মন্নুজান ছাত্রীনিবাস এবং বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রীনিবাস। কর্তৃপক্ষের দাবি, মেয়েদের ছাত্রীনিবাস সম্পূর্ণ নিয়মকানুন মতো চলছে। ছেলেগুলো দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ন্ত্রিত।
এদিকে ক্যাম্পাসজুড়ে শিক্ষক, কর্মচারীদের একাধিক ভিজিল্যান্স টিম, ৩২টি অত্যাধুনিক সিসি ক্যামেরা থাকা সত্ত্বেও সর্বশেষ গত রোববার সকাল ৯টার দিকে একটি মেয়েকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে ঝামেলা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি ছেলে রাম দা নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। ফলে ক্যাম্পাসে আতংক সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার ২ ঘণ্টা পর ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনের ঘা ঘেঁষে গড়ে ওঠা সুবোধ চন্দ্র হলে দু’পক্ষের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। সিসি ক্যামেরায় মারামারির ঘটনা দেখে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
কলেজ ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি রাকিব মোড়ল বলেন, ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীরা মাদক সেবন করে না। কলেজের পার্শ্ববর্তী বহিরাগতরা ছাত্রাবাসে প্রভাব বিস্তার করে এগুলো করে। বহিরাগতদের প্রবেশ প্রতিরোধে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং রাজনৈতিক দলগুলো সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। তিনি আরও বলেন, কলেজে যেসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তা কোনোটাই কলেজের সঙ্গে সম্পৃক্ত না।
বিএল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কেএম আলমগীর হোসেন বলেন, কলেজের পরিবেশ ভালো রাখতে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে আলাপ করে সব প্যানা-পোস্টার নামিয়ে ফেলা হয়েছে। রোববার সকালে ক্যাম্পাসে রাম দা বা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে যে ছেলে এসেছিল তার বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।