বর্ষায় জনদূর্ভোগ কমাতে সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এর নির্দেশনায় খুলনা সিটি বাইপাস সড়কে সংস্কার করছে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। খুলনা সিটি কর্পোরেশন এর কাছ থেকে ছাড়পত্র নিয়ে প্রাথমিক ভাবে সোনাডাঙ্গা মডেল থানার পাশ থেকে ময়ূর ব্রীজ পর্যন্ত ৭৮০ মিটার রাস্তা মেরামত করছে তারা। এবং রাস্তা সংস্কারের উদ্দেশ্যে প্রকল্প নিয়ে একনেকেও পাঠিয়েছে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)’র চেয়ারম্যান এস এম মিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০২১ সালে খুলনা সিটি বাইপাস সড়কের ২১৬০ মিঃ এর ময়ূর ব্রীজ এর পর থেকে জয় বাংলা মোড় পর্যন্ত ১৩৮০ মিঃ রাস্তা সংস্কার করেছে এলজিআরডি। কিন্তু সিটি কর্পোরেশন অনিচ্ছা প্রকাশ করায় ময়ূর ব্রীজের আগের থেকে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পর্যন্ত ৭৮০ মিঃ সংস্কার হচ্ছিল না। তারই ধারাবাহিকতায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ঐ এলাকার জনগনের ভোগান্তি লাঘবের আশায় আমরা নিজেরাই রাস্তাটি সংস্কার করছি। এছাড়াও রাস্তার উন্নয়নের জন্য বড় প্রকল্প গ্রহন করে ঢাকায় পাঠিয়েছেনও তারা বলেন তিনি।
এ বিষয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, রাস্তা সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র নিয়ে নিয়েছে। আমরা ঐ রাস্তায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রকল্প গ্রহন করেছি।
খুলনা-০২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল বলেন, খুলনা সিটি বাইপাস সড়ককে কেন্দ্র করে শহরের বাইরে একটি উপশহর গড়ে উঠছে। সেখানে প্রচুর মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে বসবাস করছেন। সাধারণ মানুষের ভোগান্তি লাঘবে আমি নিজে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)কে রাস্তা সংস্কারের উদ্দেশ্যে ডিও দিয়েছি। সেই ডিও অনুযায়ী খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) নিজেই রাস্তা সংস্কারের কাজ করছে।
২০১৩ সালে খুলনা সিটি বাইপাস সড়ক নির্মান করে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ)। যদিও রাস্তাটি নির্মানের এক বছরের মাথায় তা ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘ আট-নয় বছরে রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েন সিটি বাইপাস সড়ককে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও বসবাসকারি মানুষেরা। নগরীতে প্রবেশ ও বেরনোর পথ হওয়ায় দূর দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীদের ঐ রাস্তায় ভোগান্তিতে পড়তে হতো। সোনাডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ড থেকে বের হওয়া পরিবহন গুলোও ক্ষতির সম্মুখীন হতেন এই রাস্তায় চলাচলের জন্য।
কিন্তু খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ দাবী করে ২০১৫ সালে রাস্তাটি নির্মানের পর ২১৬০ মিঃ রাস্তার ১৩৮০ মিঃ অর্থাৎ ময়ূর ব্রীজের পর থেকে জয় বাংলার মোড় পর্যন্ত রাস্তা এলজিআরডির কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর ময়ূর ব্রীজের আগ থেকে সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পর্যন্ত ৭৮০ মিঃ রাস্তা খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু ২০১৭ সালে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক নির্বাচিত হবার পর রাস্তায় নিম্ম মান সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ তুলে রাস্তার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করে। এমত অবস্থায় ২০২১ সালের শেষ থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারী মাস পর্যন্ত ময়ূর ব্রীজের পর থেকে জয় বাংলার মোড় পর্যন্ত ১৩৮০ মিঃ রাস্তা সংস্কার কর এলজিআরডি। আর ময়ূর ব্রীজের আগ থেকে সোনাডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ড পর্যন্ত ৭৮০ মিঃ বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকে। জনদূর্ভোগ কমাতে স্থানীয়রা ব্যাক্তি উদ্যোগে রাস্তা সংস্কার করে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে। তারপর আবার রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ায় খুলনা -০২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ৭৮০ মিঃ রাস্তা সংস্কার করার জন্য খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ডিও দেন।
সংসদ সদস্যের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন নগরবাসি। ঐ এলাকার বাসিন্দা রাজু খাঁ বলেন,আমি আরাফাত নগরের ভিতরে থাকি। রাস্তার বেহাল অবস্থার কারনে আমাদের বাসায় যেতে ও বাসা থেকে বের হতে অনেক পথ ঘুরে শহরে প্রবেশ করতে হতো। অসুস্থ্য রোগী বা বয়স্ক মানুষ এলাকা থেকে বের হতে পারতেন না। ওখানার অপর একজন ব্যবসায়ী কামরুল এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লোকসানের মুখে পড়ছিল আমাদের রাস্তার বেহাল দশার কারনে। এখন সংসদ সদস্যের নির্দেশনায় সংস্কার কাজ হওয়ায় আমরা ব্যবসায়ীরা কিছুটা লাভের মুখ দেখব। রাস্তা থেকে নিয়মিত যাতায়াতকারী কলেজ ছাত্র মঈন বলেন, প্রতিদিন কলেজে যেতে আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হতো। বর্ষা মৌসুমে রাস্তা ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যেত। এখন সংস্কার শেষ হলে সামনে বর্ষা মৌসুমে আমাদের ভোগান্তি কমবে।