সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা রবিবার , ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গেছে | চ্যানেল খুলনা

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গেছে

লুৎফর রহমান :: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বিশ্বব্যাপী দেশগুলোকে ২০৫০ সালের আগে নেট জিরো নির্গমন অর্জন এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্যে জরুরি ও সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। সম্প্রতি, সন্ধ্যায় কেনিয়ার নাইরোবিতে ষষ্ঠ জাতিসংঘ পরিবেশ সম্মেলনে ন্যাশনাল স্টেটমেন্ট প্রদান কালে এ কথা বলেন পরিবেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে নগন্য অবদান সত্ত্বেও, বাংলাদেশ হিমবাহের গলন, বন্যা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মতো বিরূপ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের মূল কারণগুলো নিরসন এবং টেকসই স্থাপনার লক্ষ্যে আরও বেশি বহুপক্ষীয় প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। বাংলাদেশের পরিবেশগত দায়িত্বের প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরে পরিবেশমন্ত্রী ২০১৯ সালে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত ‘পৃথিবীর জরুরি অবস্থা’ ঘোষণার প্রস্তাবের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ জলবায়ু সহনশীলতা বৃদ্ধি এবং টেকসই উন্নয়নকে প্রচারের লক্ষ্যে ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা’ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের সংবিধানে পরিবেশ সংরক্ষণের নীতিগুলো অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের আন্তরিকতার প্রমাণ দিয়েছে। প্লাস্টিক দূষণকে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় পর্যায়ে প্লাস্টিকের বর্জ্য মোকাবেলা এবং টেকসই ভোগ ও উৎপাদন পদ্ধতিতে রূপান্তরের জন্য সম্মিলিত চেষ্টা চালাতে হবে। বাংলাদেশ বৈশ্বিক পরিবেশগত শাসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইউএনইএ-৬ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সবুজ, আরও স্থিতিশীল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে ‘পোস্ট কপ ওয়ার্কশপ বাই অক্সফাম’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে গেছে। কপ-২৮ সম্মেলনেও স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টিকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তাই বিশ্বসহ বাংলাদেশও স্বাস্থ্যঝুঁকি নিরসনে কাজ করছে।’ ‘জলবায়ুর বিষয়টা এখন মূল আলোচনার বিষয়ে এসে গেছে। স্বাস্থ্য বলেন, অবকাঠামো বলেন, যা-ই বলেন, সবকিছুতেই এখন জলবায়ুর বিষয় চলে এসেছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে স্বাস্থ্যে। তাই এটিকে জোর দিয়ে কাজ করছি আমরা।’ ‘স্বাস্থ্যের বিষয়টি জলবায়ু পরিবর্তনে জোরালোভাবে আসছে। স্বাস্থ্যের যে ক্ষতি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হয় তা নিয়ে কাজ করতে হবে।’ ‘কপের অঙ্গীকার অনেক আছে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা জরুরি। উন্নত বিশ্ব বলছে, আমাদের ২১ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। অথচ লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ১০০ বিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা। আমরা কপে লস অ্যান্ড ড্যামেজ বিষয়ে কথা বলেছি। এই তহবিল সংগ্রহে কাজ করছি।’

তিনি বলেন, ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে বাংলাদেশই প্রথম দেশ যারা কিনা এ ব্যাপারটা সামনে নিয়ে আসে। তাই আমরা এটি নিয়ে জোরালোভাবে কাজ করছি। তবে খেয়াল রাখতে হবে সবকিছু যেন আবার লস অ্যান্ড ড্যামেজে চলে না যায়। অনেক বেশি ভার যেন লস অ্যান্ড ড্যামেজে না পড়ে। কেননা, শুধু লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল নিলেই তো হবে না। যেন জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতেও কাজ করতে হবে। এ জন্য সে বিষয়ে অর্থায়ন প্রয়োজন।’ জলবায়ু পরিবর্তনের অর্থায়ন ও ক্ষতি দুটি বিষয় আলাদা হলেও এগুলো নিয়ে ভাবতে হবে মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি যা হয়েছে তার তহবিলের চেয়ে যেন ক্ষতির সম্মুখীন ভবিষ্যতে না হই সে অর্থায়ন নিয়েও কাজ করা প্রয়োজন। ক্ষতিটা যেন ওই পর্যায়ে না যায় সেটা বিবেচনা করতে হবে। আর এ জন্যই এটার অর্থায়নও দরকার। আমরা দুটি বিষয় নিয়েই কাজ করছি।’

সাবের হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর আমাদের অ্যাডাপটেশনে ৯ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। সেখানে সরকার সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার দিচ্ছে শুধু অ্যাডাপটেশনে। যদি এই বিপুল পরিমাণ অর্থ শুধু জলবায়ুতে দেয়া না লাগত, তাহলে রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামো খাতে ব্যয় করতে পারতাম। এখন আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় কাজ করতে হচ্ছে। তাই এটিকে কমিয়ে এনে বাকি বিষয়গুলোতে অর্থায়নের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।’

জলবায়ুতে বিনিয়োগ বিলিয়ন ডলার বাঁচাতে পারে: জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভব্য প্রভাব মোকাবিলায় দ্রুত বিনিয়োগের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে পারে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে আগামী দশকে দেশের জিডিপিতে যা প্রভাব পরতে পারে তা প্রতিরোধ করাও সম্ভব হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভব্য প্রভাব মোকাবিলায় দ্রুত বিনিয়োগের মাধ্যমে বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে পারে বাংলাদেশ। এর মাধ্যমে আগামী দশকে দেশের জিডিপিতে যা প্রভাব পরতে পারে তা প্রতিরোধ করাও সম্ভব হবে। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন এবং পাকিস্তানসহ ১০টি দেশে জলবায়ু অভিযোজন বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে। দ্য অ্যাডাপ্টেশন ইকোনমি বা অভিযোজন অর্থনীতি শীর্ষক এই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে জলবায়ু অভিযোজনে ন্যূনতম ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ না করলে বাংলাদেশ ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে। এতে ১১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ১০টি দেশে ন্যূনতম ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ না করলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩৭৭ বিলিয়ন ডলার। প্রতিবেদনে ধরে নেওয়া হয়েছে, প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে এটি বৃদ্ধি পেয়ে ৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে দাঁড়ালে ন্যূনতম বিনিয়োগের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে ৬২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হতে পারে এবং বিনিয়োগ না করা হলে সম্ভব্য ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে। জলবায়ু অভিযোজন প্রকল্পগুলোর মধ্যে আছে—বন্যার ঝুঁকিতে থাকা অঞ্চলগুলোয় উপকূলীয় সুরক্ষা-বাঁধ নির্মাণ করা, খরা-প্রতিরোধী ফসল নিয়ে গবেষণা এবং ভবিষ্যৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

গবেষণায় বলা হয়, বিশ্বব্যাপী প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যগুলো অর্জন সম্ভব হলেও, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর কৌশলের পাশাপাশি বৈশ্বিক ডিকার্বনাইজেশন এজেন্ডাগুলো অনুসরণ করতে হবে। অর্থায়নের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড-এর চিফ সাসটেইনেবিলিটি অফিসার মারিসা ড্রিউ বলেন, ‘এই প্রতিবেদন থেকে স্পষ্ট যে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন যতটা সম্ভব ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে এবং প্রভাবসমূহের বাস্তবতা মেনে ও মানিয়ে নিতে হবে। দেশ ও জাতিকে কৃষি, শিল্প এবং অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও আরও উন্নত করার চেষ্টা অব্যাহত রেখে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে হবে। উদীয়মান এবং দ্রুত-উন্নয়নশীল অর্থনীতির জন্য এই ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও বৈরি আবহাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব ও ঝুঁকি মোকাবিলা প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি বলে আমি মনে করি।’

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং বিটপী দাস চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো একটি দেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এই দশকে আমরা অভিযোজনে বিনিয়োগে যদি ব্যর্থ হই, তবে তা বিভিন্ন সুযোগ হারানোর ঝুঁকি বৃদ্ধি করবে। আমাদের কাজ শুরু করার এখনই উপযুক্ত সময়, আর এই প্রতিবেদন সেটিই প্রমাণ করে।’

https://channelkhulna.tv/

স্বাস্থ আরও সংবাদ

মশক নিধনে ৫৩ বছরে বিশেষজ্ঞের মতামত নেওয়া হয়নি উপদেষ্টা

যে ২ খাবার অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে

ডেঙ্গুতে একদিনে ১০ জনের মৃত্যু

শরীরে ভিটামিন ডি’র ঘাটতির লক্ষণ ও প্রভাব

রাত ১০ টার পর কি ডিনার করা ঠিক? যা বলছেন পুষ্টিবিদ

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
সম্পাদক: মো. হাসানুর রহমান তানজির
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
প্রধান কার্যালয়ঃ ৫২/১, রোড- ২১৭, খালিশপুর, খুলনা।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য অধিদফতরে অনলাইন নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।