জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান -এর ৪৭তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস এবং শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আয়োজনে রোববার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় কুয়েট অডিটোরিয়ামে এক বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এমপি এবং প্রধান আলোচক হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন কুয়েটের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. খুরশিদা বেগম। সভায় বিশেষ আলোচক হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ এর সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এছাড়াও সভাকে সাফল্যমণ্ডিত করতে সভায় সশরীরে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ নেতৃবৃন্দ এবং কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক এবং বর্তমান নেতাকর্মীরা । বিশেষভাবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ এর প্রতিনিধিত্ব করেন ফুয়াদ হোসেন শাহাদাৎ, আল মামুন এবং আহমেদ নাছিম ইকবাল।
সভায় বক্তারা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৫ আগস্ট এ ঘাতকের বুলেটে নির্মমভাবে নিহত হওয়া সকল শহীদকে৷ সভায় বক্তারা বলেন ; ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ইতিহাসের জঘন্যতম, নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শোকাবহ দিন।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বিশ্ব মানবতাকে দংশনকারী হন্তারক হায়েনারা গোটা বাঙালি জাতিকে কলঙ্কিত করেছিল। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক ভবনে ঘাতকের নির্মম বুলেটে বিদ্ধ হয়েছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবার।অকুতোভয় বঙ্গবন্ধু ঘাতকের বুলেটের সামনে দাঁড়িয়েও খুনিদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ‘তোরা কী চাস? আমাকে কোথায় নিয়ে যাবি?’ বঙ্গবন্ধুকে দেখেও হাত কাঁপেনি খুনিদের। গুলি চালিয়েছে নরপশুরা।সেদিন ঘাতকের বুলেটে প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, ছোট্ট শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজী জামাল, ভাই শেখ নাসের, কর্নেল জামিল।খুনিদের বুলেটে সেদিন আরও প্রাণ হারান বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে মুক্তিযোদ্ধা শেখ ফজলুল হক মণি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, শিশু বাবু, আরিফ রিন্টু খানসহ অনেকে। ওই সময় দেশে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা।
জাতির জন্য গভীর শোক ও বেদনার দিবসটি হত্যা, ষড়যন্ত্র, ক্যু রুখে দেওয়ার শপথ গ্রহণেরও দিন। গণতন্ত্রের পথে সাংবিধানিক নিয়মতান্ত্রিকতায় দেশ শাসনের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ প্রতীতিতে সমুন্নত হওয়ারও দিন।বস্তুত, ১৫ আগস্টে ঘাতকচক্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে হত্যা করলেও তার স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। বরং স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্রবিরোধী চক্রের যে কোনও অপতৎপরতা-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকার শক্তিতে উজ্জীবিত হয়েছে বাংলাদেশ, বাঙালি জাতি।এছাড়াও বক্তারা বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন ভয়াল ২১ আগস্ট, ২০০৪ এ বঙ্গবন্ধু কন্যা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে করা গ্রেনেড হামলায় নিহতদের। বক্তারা তাদের বক্তব্যে ২১ আগস্ট বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানান এবং গ্রেনেড হামলায় নিহত শহীদদের মাগফেরাত কামনা করেন।