চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি, সময়োপযোগী বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে ৩৯৫ রানের বিশাল টার্গেটকে মায়ার্স মামুলি বানিয়ে ফেলেছিলেন। ৪১৫ মিনিট ক্রিজে থেকে ৩১০ বল খেলে দলকে পরিয়েছেন জয়ের মালা। আর তখন কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়া মায়ার্স চাপ কমাতেই কিনা স্কোবোর্ডের দিকে তাকাননি! ম্যাচ শেষে সংবাদ মাধ্যমকে সেই কথাই বলেছেন, ‘আমি আসলে লক্ষ্যের দিকে তাকাচ্ছিলাম না। আমি আমার পরিকল্পনা নিয়ে যতক্ষণ সম্ভব এগুনোর চেষ্টা করছিলাম, চেষ্টা করেছি স্কোরবোর্ডের দিকে না তাকাতে। যত বেশিক্ষণ পারা যায়, ততক্ষণ ব্যাট করতে। আমার নিজের মধ্যে বিশ্বাস ছিল যে, আমি সারা দিন ব্যাট করতে পারলে দল জয় পাবে।’
৩৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে ৩টি সেঞ্চুরি ও ১২টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ১ হাজার ৬৬৮ রান আছে মেয়ার্সের। এই অভিজ্ঞতা নিয়েই চট্টগ্রামে করলেন বাজিমাত। তাই বাংলাদেশের বিপক্ষে করা ২১০ রানের এই ইনিংসটিকে ‘বিশেষ’ তকমা দিয়েছেন তিনি, ‘আমার কাছে এটি খুবই স্পেশাল। আমার সর্বোচ্চ স্কোর এটি। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আমি এবারই এতক্ষণ ব্যাট করলাম। সুতরাং এটি আমার কাছে অনেক স্পেশাল যে, আমি আমার প্রথম টেস্টেই ডাবল পেয়েছি।’
অবশ্য আগে থেকে ডাবল সেঞ্চুরি কিংবা রেকর্ড- তেমন কিছু ভাবনায় ছিল না মায়ার্সের। অভিষিক্ত এই ক্রিকেটারের ভাবনাতে কেবল ছিল দলের জয়, ‘ব্যক্তিগতভাবে সেঞ্চুরির চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম যে দলের জন্য আমার আরও বেশি করা প্রয়োজন ছিল। ব্যাটিং করার সময় ১৫০ করার চিন্তা করছিলাম। দিনের শুরুতে আমি ভেবেছিলাম, যদি আমি ১৫০ বা ১৬০ করি, তাহলে দল জয়ের জন্য ভালো অবস্থানে থাকবে। কিন্তু ১৬০ ছোঁয়ার পর আমি বুঝতে পারলাম যে, আমাকে আরও দূর যেতে হবে এবং এটি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল।’
দলকে জেতাতে মায়ার্স তিন সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছিলেন। ক্যারিবীয় এই তরুণ জানালেন, পঞ্চম দিনের উইকেটে ব্যাটিং করা মোটেও সহজ ছিল না, ‘এই উইকেটে ব্যাট করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং ছিল। বোলাররা ভালো করেছে। এমন কিছু সময় ছিল যখন আমাদের পিচে খুঁটি গেড়ে টিকে থাকতে হয়েছে। এরপর রান করার সুযোগ এলে সেটি নিয়েছি। কিছু বল নিচু ছিল, কিছু বল বাউন্স করেছে। স্পিনাররা টার্ন করাচ্ছিল, আর্ম বল করছিল। উইকেট এক-এক সময় এক-এক রকম আচরণ করছিল। আমি আমার পরিকল্পনা মেনে চলেছি এবং সোজা ব্যাট নিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি।’
অভিষেকে ইতিহাস গড়া এই ক্রিকেটার আরও জানালেন, ভবিষ্যতে ক্রিকেটের ভালো একজন ছাত্র হতে চান তিনি, ‘লক্ষ্য হচ্ছে উন্নতি করতে থাকা, খেলাটির ভালো একজন ছাত্র হওয়া। এই ইনিংস থেকে ইতিবাচক বিষয়গুলো পরের টেস্টে নিয়ে যাওয়া।’