শেখ মাহতাব হোসেন :: খুলনার ডুমুরিয়ায় মাধ্যমিক পর্যায়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে জগা-খিচুড়ি অবস্হা। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে অর্থ বানিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত নালিশ জমা পড়েছে। বেশ কয়েকটি নিয়োগ বন্ধে মানববন্ধন হয়েছে।
তবে অধিকাশ প্রতিষ্ঠানে কাজের কাজটি কিছু হয়নি। লতা খামারবাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে ৮ মার্চ। ল্যাব সহকারি, অফিস সহকারি, আয়া ও নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগের জন্য একটি বোর্ড গঠন করা হয়। ওই বোর্ড গঠনে অনিয়মের অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেন এলাকাবাসী। সভাপতি স্বীকারও করেন বোর্ডেও এক সদস্যকে বাদ দিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অন্যব্যক্তিকে বোর্ডে অর্ন্তভুক্ত করেছেন। অথচ কোন তদন্ত ছাড়াই যথা সময়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। যেকারণে এলাকাবাসী ওই নিয়োগ বালিতের দাবিতে মানব বন্ধন করেছে। তবে এখনও সেব্যাপারে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। বরং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলেছেন যথাযথ নিয়োগ মেনেই স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।
মিকশিমিল রুদাঘরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক ও অফিস সহকারি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে গত ১৬ মার্চ। ওই নিয়োগের আগেই অর্থের বিনিময়ে নিজস্ব ব্যক্তিদের নিয়োগের পায়তারা করার অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করা হয়। ডুমুরিয়া সহকারি জজ আদালতে দেওয়ানি ৯৪/২০২৩ মামলাটিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধের জন্য নিষেধাজ্ঞা চাইলে আদালত না মঞ্জুর করেছে বিধায় সরকারি কৌশলী(জিপি) এড মোঃ আইয়ুব আলী শেখ ১৬ মার্চ লিখিত মতামত দেন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোন বাধাঁ নেই। ওই দিন সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করে সোহেল পারভেজকে অফিস সহকারি এবং আলী হোসেন গাজীকে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।
তবে অভিযোগকারী উজ্জল কুমার সাহা এবং রুদাঘরা ইউপি চেয়ারম্যান গাজী তৌহিদ বলেন, নির্ধারিত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়ার জন্য কোন অভিযোগ ও মামলা আমলে নেয়নি বর্তমান সভাপতি।
তবে সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, সকল প্রক্রিয়া বিধি সম্মত ভাবে হয়েছে। রুদাঘরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অফিস সহায়ক ও
আয়া পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সকল কার্যক্রম দৌলতপুর সরকারি মহসীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে স্থান নির্ধারন করা হয়। যা নিয়ে এলাকায় ব্যপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারেও কোন ব্যবস্হা হয়নি।
ধামালিয়ার ফারাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গত ৪ মার্চ ৪ টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। ওই বিদ্যালয়ে আয়া পদে পরীক্ষা দেন ৩ জন। এর মধ্যে আছমা খাতুন ১৬ বছর ধরে বিনা বেতনে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। দাবিকৃত টাকা না দেয়ায় তাকে নিয়োগ না দিয়ে অন্য একজনকে নির্বাচিত করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় মানববন্ধনসহ নানা আন্দোলন শুরু হয়। এক পর্যায়ে গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান শুনানী শেষে ওই নিয়োগ বাতিল করেন।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মোটা অংকের টাকা নিয়ে পছন্দেও প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ায় এবং নিয়োগ বোর্ড এর কর্তা ব্যক্তিদের নানা ভাবে ম্যানেজ করায় একের পর এক বির্তকিত নিয়োগ হচ্ছে। আর একাধিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে বার বার অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহন না করায় সকল নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলেন দিবাসিষ কুমার বিশ্বাস বলেন, অর্থ লেনদেন কোন প্রতিষ্ঠান করলে তার দায় তাদের। সকল পরীক্ষা নিরপেক্ষ ভাবে হচ্ছ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্হা নেয়া হবে।