শেখ মাহতাব হোসেন:: খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের খালবিলে দেশীয় মাছ রয়না বিলুপ্তির পথে। এমন একটা সময় আসবে যখন ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এটা কথাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে, বাস্তবে মিলবে না। গোলাভরা ধান আর পুকুরভরা মাছ- এসব এখন অতীত। বিভিন্ন ডায়িং, কলকারখানার বর্জ্য ও বিষাক্ত কেমিক্যাল নদী, খাল, বিল ও পুকুরের পানিতে এসে মিশে দেশীয় প্রজাতির শিং, কৈ, টেংরা, পুঁটি, মলা, মাগুর মাছসহ ইত্যাদি প্রজাতিকে বিলুপ্তির পথে নিয়ে গেছে।
পুকুরে এখন রুই, কাতল, মৃগেল, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া, সরপুঁটি, মাগুর, শিং, কৈ, পাবদা ইত্যাদি মাছ চাষ করা হয়। এতে করে দেশের মানুষের মাছের চাহিদা হয়তোবা পূরণ হচ্ছে কিন্তু দেশীয় মাছের যে স্বাদ বা পুষ্টি, তা আমরা পাচ্ছি না। আগে দেশীয় একটি কৈ বা শিং মাছ খেয়ে যে তৃপ্তি পাওয়া যেত, তা এখন চাষ করা মাছে পাওয়া যায় না। বাণিজ্যিক আকারে মাছ চাষের কারণে বিভিন্ন খাবার বা ওষুধ মাছে প্রয়োগ করা হয়। এতে দেশীয় প্রজাতির মাছের স্বাদ থাকে না।
এ ব্যাপারে খুলনার ডুমুরিয়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দিক বলেন, আমরা বিভিন্ন যুগোপযোগী পদ্ধতির মাধ্যমে দেশীয় মিঠা পানির মাছের ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করব। দেশীয় মাছ আমাদের দেশের সম্পদ, তা রক্ষা করতে যাবতীয় ব্যবস্থা আমাদের পক্ষ থেকে নেয়া হবে, সেই সঙ্গে দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় সচেতন মানুষদের এগিয়ে আসতে হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে মিঠা পানির ২৬০ প্রজাতির মধ্যে ১৪৩টি ছোট মাছ। এর মধ্যে ৬৪ প্রজাতির মাছ বিলুপ্তপ্রায়। ফলে এক দশক আগেও বাজারে ছোট মাছের প্রাপ্যতায় ছিল নানা সংকট। ছোট মাছ পাওয়া গেলেও দাম ছিল ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।
বিশেষ করে দেশীয় কৈ, শিং, মাগুর, পাবদা কেনার সামর্থ্য ছিল না অনেকের। আবহমান গ্রামবাংলার নদ-নদী, হাওর-বাঁওড় ও খালবিল শুকিয়ে যাওয়াসহ জলবায়ুর প্রভাবে দেশীয় প্রজাতির সুস্বাদু, বাহারি এসব মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে।