চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃগত কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪ নং মাগুরখালি ইউনিয়নের গজালিয়া, খুদিরাবাদ, চিত্রামারী, হোগলাবুনিয়া, পার মাদারতলা এলাকার কয়েক হাজার বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।জলাবদ্ধতার কারণে সাধারণ মানুষকে চরম দূর্গতিতে পড়তে হয়েছে। স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ মানুষ পানি নিষ্কাশনের মূল পথ চিলা নদীর স্লুইচ গেটটি সংস্কার করায় অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে সরকারী ভাবে কোনো উদ্যোগ বা বরাদ্দ না থাকায় এ সমস্যার কোনো স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে, অভিযোগ উঠেছে, গত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতিকের প্রার্থীকে ভোট দেয়ায় দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক বর্তমান চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ ক্ষব্ধ হয়ে রাস্তাঘাট সংস্কার, পানি সরবরাহসহ এলাকার সার্বিক উন্নয়নে ইচ্ছা করেই কোনো ভূমিকা রাখছেন না।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে মাগুরখালি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। নিচু অঞ্চলগুলো বেশী প্লাবিত হয়েছে। অনেক স্থানেই রাস্তাঘাট পানিবদ্ধ হয়ে চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। মানুষের ঘরবাড়ির উঠান, রান্নাঘর, ক্ষেত খামার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি মানুষদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রয়াত জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র মন্ডলের সেজোভাই সুজিত চন্দ্র মন্ডলের নেতৃত্বে গত শুক্রবার এবং গতকাল মঙ্গলবার দুই দফায় স্থানীয় এলাকাবাসি স্বত:স্ফুর্তভাবে ও স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে চিলা নদীর স্লুইচ গেটটি সংস্কার করেন। যদিও সংস্কার কাজটির ফলে এলাকার পানি কিছুটা নেমেছে, কিন্তু পুরোপুরি সমস্যার সমাধান হয়নি এখনো।
সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত উপজেলা নির্বাচনে নৌকা মনোনীত প্রার্থীকে ভোট দিয়েছিলেন এই ইউনিয়নের মানুষ। বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক। তাই এ এলাকার উন্নয়ন তিনি ইচ্ছে করেই করছেন না। সাধারণ মানুষের পাশে দাড়াচ্ছেন না। ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়ার পর তিনি কোনো সাহায্য বা সহযোগিতা করেননি। এমনকি জরুরী ভিত্তিতে কোনো বরাদ্দও দেননি। তাই বাধ্য হয়ে এলাকাবাসী সুজিত মন্ডলের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে স্লুইচগেট সংস্কার করে।
অন্যদিকে, অভিযোগ রয়েছে, ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্লু গোল্ড, মৎস্য অধিদফতরসহ বিভিন্ন সংস্থা নদী নালা খাল বিল সংরক্ষণ করছে, কিন্তু জলাবদ্ধতা দূরীকরণে এলাকায় খাল খননের কোনো উদ্যোগ নেয়নি বরং খাল খননের নামে ভূয়া প্রকল্পের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে মহল বিশেষের বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে স্লুইচ গেট সংস্কারে নেতৃত্ব দেয়া সুজিত চন্দ্র মন্ডল জানান, জলাবদ্ধ মানুষের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোনো উদ্যোগ বা বরাদ্দ না থাকায় নিরুপায় হয়ে সাধারণ মানুষকে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত শুক্রবার ও গতকাল মঙ্গলবার দিনভর এলাকার মানুষ কাজ করেছে। বর্তমানে অবস্থার সামান্য উন্নতি হয়েছে। এলাকার জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানে তিনি প্রয়োজনীয় খাল খননের দাবি জানান।