সব কিছু
facebook channelkhulna.tv
খুলনা মঙ্গলবার , ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ , ৫ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিবাদ সত্বেও ডুমুরিয়ায় ভদ্রা, শালতা নদীর শোভনা ও গাবতলায় গাবের ডাল দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো নির্মাণ হচ্ছে! | চ্যানেল খুলনা

এলাকাবাসীর তীব্র প্রতিবাদ সত্বেও ডুমুরিয়ায় ভদ্রা, শালতা নদীর শোভনা ও গাবতলায় গাবের ডাল দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো নির্মাণ হচ্ছে!

অনলাইন ডেস্কঃখুলনার ডুমুরিয়া উপজেলাধীন শোভনার পশ্চিমপাড়া ও গাবতলা নামক স্থানে মরা ভদ্রা ও শালতা নদীর বুক ভরাট করে অন্তত বিশ বছর আগে পাকা সড়ক নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি)। বর্তমান ওই দুইটি নদী খনন শেষে সংযোগ দিতে সড়ক কেটে গাব গাছের ডাল দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো নির্মাণ করা হচ্ছে। যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
তারা বলছে, প্রতিদিন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের এ স্থান দিয়ে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত ছিলো খনন প্রকল্পে দু’টি ব্রীজ নির্মাণ করা। কিন্তু তারা তা না করে গাবের ডাল দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করছে। ফলে প্রতিদিন কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য মালামালসহ আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।

এলাকাবাসী গত ২২ মে বাংলদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত ভাবে ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা-খর্নিয়া কার্পেটিং সংযোগ সড়কে ভদ্রা নদীর বাঁধ কেঁটে সাঁকো নির্মানের প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানব বন্ধন পালন করেছে। এলাকাবাসী জানান, গত অর্থ বছরে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার ডুমুরিয়া ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার ভদ্রা ও শালতা নদী খনন কাজ শুরু করেন। নদী খননের সময় বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংযোগ সড়ক থেকে যায়। মানুষ চলাচলের জন্য কিছু সংযোগ সড়কে পাউবো বেশ কয়েকটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। এ সকল ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে জনসাধারণের সাময়িক ভাবে যাতায়তের ব্যবস্থা হয়। খননের সময় উপজেলার শোভনা-খর্নিয়া সংযোগ কার্পেটিং সড়কটি থেকে যায়।
এলাকাবাসীর দাবী গুরুত্বপূর্ন সংযোগ সড়কটিতে একটি কালভার্ট- ব্রিজ নির্মান করে সড়কটি কাটা হোক। এলাকাবাসী কয়েক দফা প্রতিবাদ সভা শেষে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাউবো বরাবর আবেদন করেছেন। সম্প্রতি সড়কের পাশ দিয়ে পাউবো চলাচলের জন্য হালকা ধরনের বাঁশ ও গাবডাল দিয়ে সাঁকো নির্মান করায় চরম ভোগান্তির স্বীকার হন ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মাত্র ১২ থেকে ১৩ বছর আগেও ডুমুরিয়া উপজেলার ভদ্রা-শালতা নদী ঘিরে হাজার হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা চলতো। জোয়ার-ভাটা, মাছ শিকার ও নৌযান চলাচল ছিলো নিত্য- নৈমিত্তিক চিত্র। অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ছিলো নদী দু’টির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কিন্তু কালের বিবর্তমানে ও নানা প্রতিকূলতার মুখে ভদ্রা ও শালতা নদীতে প্রায় ৩০ কিলোমিটার পলিপড়ে নাব্যতা হারিয়ে ভরাট হয়ে যায়। আর ভরাটের সাথে সাথে নদীর বুক জুড়ে শুরু হয় অবৈধ দখল। প্রভাবশালীরা যে যার মত করে ভরাট হওয়া নদীর বুক দখল করে নেয়। দখলবাজ চক্র নিয়ম বহির্ভূতভাবে ভরাট হওয়া জমিতে গড়ে তোলে বসত বাড়ি, রাইস মিল, স মিল, বাজার, বহুতল ভবনসহ নানা স্থাপনা। যার ফলে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের পথ স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতায় করুণ পরিণতির সৃষ্টি হয়। হাজার হাজার বিঘা কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে যায়। অনেক  বসত বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ে। এমন সব পরিস্থিতিতে ২০০৫ সালে নদী দু’টি খননের উদ্যোগ নেয় খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে লাল ফিতা বন্দী হয়ে পড়ে। এরপর ফের উদ্যোগটি বাস্তবায়নে ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে ওই নদী দু’টি খননের জন্য ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজল (ডিপিপি) জমা দেয়া হয়। যার প্রেক্ষিতে প্রকল্পটি সম্ভাব্যতা যাচাই করে এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সরকার গত ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একনেকের বৈঠকে ৭৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্প অনুমোদন দেয়। যার বাস্তবায়ন মেয়াদ নির্ধারণ করা  হয় ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর। ভদ্রা নদী দক্ষিণ অংশে ডুমুরিয়ার দিঘলিয়া (স্থানীয় নাম দিঘেলা) থেকে ডুমুরিয়া বাজার পর্যন্ত ১১ দশমিক ৭ কিলোমিটার এবং উত্তরাংশের তেলিগাতি হতে ডুমুরিয়া বাজার পর্যন্ত ৯ দশমিক ৮ কিলোমিটার খনন শেষ হয়েছে। এছাড়া সালতা নদীটি ডুমুরিয়া বাজারের ভদ্রা নদী থেকে শুরু হয়ে ৯ কিলোমিটার খনন করে শৈলমারি নদীতে সংযুক্ত করা হচ্ছে। নদীর প্রস্থ ১২০ ফুট এবং গভীরতা ১২ থেকে ১৪ ফুট পর্যন্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, ৯টি প্যাকেজে কাজগুলো পায় আর বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আমিন এ্যান্ড কোং, হাসান এ্যান্ড ব্রাদার্স, কেএসএল জেভি, রানা বিল্ডার্স, সালেহ আহমেদ ও কামরুল এন্টারপ্রাইজ। দু’টি ব্রীজ নির্মাণ ছাড়া ইতোমধ্যে সকল খনন কাজ শেষ করা হয়েছে।
আ’লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বাদশা বলেন, নদী দু’টি খনন হলে উপজেলার সকল মানুষের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে। উপজেলাবাসী স্থায়ী জলাবদ্ধতাকে মুক্তি পাবে। বিশেষ করে কৃষক শ্রেণীর মানুষ নানাভাবে উপকৃত হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে। কিন্তু সেই লক্ষ্য ও  উদ্দেশ্য কতটুকু পূরণ হবে তা নিয়ে তাদের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ নদীর বেশির ভাগ স্থানে সঠিকভাবে খনন করা হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর নিচে কোথাও কোথাও পিঠ উঁচু রয়ে গেছে। যা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আর খনন করা সম্ভব হয়নি। অনেক জায়গায় প্রস্থও কম খনন করা হয়েছে। এছাড়া একই নদীর গাবতলা অংশ বড় এবং মলমলিয়া অংশ সরু করে খনন করা হয়েছে। অন্যদিকে দু’পাড়ে রাখা খননকৃত মাটির উপর ফের শত শত বসতবাড়ি নির্মাণ করে দখল করা হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, শোভনা ও গাবতলা নমাক স্থানে হাজার হাজার মানুষের পারাপারে গাব গাছের ডাল দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের উচিত ছিলো প্রকল্পে দু’টি ব্রীজ নির্মাণ করা । কিন্তু তারা তা না করে গাবের ডাল দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করছে। ফলে প্রতিদিন কৃষিপণ্য ও অন্য মালামালসহ আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে মানুষের চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী হাসনাতুজ্জামান বলেন, খননকৃত নদী পরিমাপ করেই ঠিকাদারদের চূড়ান্ত বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। কিন্তু দু’পাড়ে রাখা খননকৃত মাটি ধসে পড়ায় প্রস্থ সঠিকভাবে খনন করা যায়নি। তবে যেটুকু খনন হয়নি তার বিল পরিশোধ করা হচ্ছে না।
এ সময় দখল ও ব্রীজ নির্মাণের ব্যাপারে অন্য প্রকৌশলীরা বলেন, নদী দু’টি জেলা প্রশাসনের। তাই দখলমুক্ত করার দায়িত্ব তাদের। আর প্রকল্পে ব্রীজ নির্মাণের বিষয়টি ধরা ছিলো না। তাই এখন ব্রীজ নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ১৮ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে ব্রীজ নির্মাণ করা হবে।

Your Promo BD

সংবাদ প্রতিদিন আরও সংবাদ

দৈনিক খুলনা টাইমস পত্রিকার ৫ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ২ দিন পেছাল মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি

তিনটি আসনের মনোনয়ন কিনেছেন সাকিব আল হাসান

‘সাংবাদিকরা যুক্তরাষ্ট্রকে আমাদের ডোমেস্টিক ইস্যুতে ইনভলভ করে’

‘আমাকে নিয়েন না ভাই, আমার মা-ছেলে অসুস্থ’

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি

চ্যানেল খুলনা মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন  
DMCA.com Protection Status
উপদেষ্টা সম্পাদক: এস এম নুর হাসান জনি
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: শেখ মশিউর রহমান
It’s An Sister Concern of Channel Khulna Media
© ২০১৮ - ২০২২ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | চ্যানেল খুলনা.বাংলা, channelkhulna.com, channelkhulna.com.bd
যোগাযোগঃ কেডিএ এপ্রোচ রোড (টেক্সটাইল মিল মোড়), নিউ মার্কেট, খুলনা।
ঢাকা অফিসঃ ৬৬৪/এ, খিলগাও, ঢাকা-১২১৯।
ফোন- 09696-408030, 01704-408030, ই-মেইল: channelkhulnatv@gmail.com
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্তির জন্য আবেদিত।