নাফি উজ জামান পিয়াল, যশোর প্রতিনিধি : যশোর জেলায় বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
মঙ্গলবার একদিনেই করোনা শনাক্ত হয়েছে ১০ জন। গত ৫ দিনে জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৪৪
জন। এদের মধ্যে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই জনের দেহে করোনাভাইরাস
ধরা পড়েছে। প্রথমে তারা তথ্য গোপন করেছিল। ফলে করোনা শনাক্ত হওয়ার পর ওই দুইজনের সংস্পর্শে আসা
১১ জন চিকিৎসক ও ১১ জন নার্সসহ মোট ২৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আরিফ আহমেদ এ তথ্য
নিশ্চিত করেছেন।
ড. আরিফ জানান, দুইজন মধ্য বয়স্ক পুরুষ হাসপাতালে আসেন এবং ভর্তি হন। একজন পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে
এবং অন্যজন করোনারি কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে ওই দুই ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক
তাদের জ্বর, কাশিসহ করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখতে পান। গত ২৬ এপ্রিল তাদের নমুনা সংগ্রহ করে করোনা
পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। পরীক্ষার ফলাফলে তাদের দুজনের দেহে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। রোগীদের
পরিবার তথ্য গোপন করায় হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ অনেক মানুষ এখন ঝুঁকিতে আছেন। ওই দুইজন
রোগীর সংস্পর্শে যাওয়া ১১ জন ডাক্তার ও ১১ জন নার্সসহ সংশ্লিষ্ট ২৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো
হয়েছে। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে। তাছাড়া তাদের সংস্পর্শে আসা হাসপাতালের
অন্যান্য ডাক্তার ও নার্সদেরও পর্যায়ক্রমে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তাদের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিত না
থাকলে তারা কাজে ফিরবে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ওই দুইজন করোনা রোগীর সংস্পর্শে
আসা ১১ জন চিকিৎসক এবং ১১ নার্সসহ সকলের করোনা পরীক্ষা করা হবে। তাদের সংস্পর্শে এসেছে তাদেরও
নমনুা সংগ্রহ করে টেস্ট করা হবে। ওই দুইজনের পরিবার তথ্য গোপন করায় হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সসহ
অনেক মানুষ এখন ঝুঁকিতে আছেন। রোগীর তথ্য গোপনের প্রবণতা চিকিৎসকদের জীবনকে এই ঝুঁকির মধ্যে
ফেলেছে। সব রোগীর কাছে অনুরোধ করছি তারা যেন ডাক্তারদের কাছে কোনো তথ্য গোপন না করেন। তথ্য
গোপন করলে ডাক্তাররা আক্রান্ত হবেন, কোয়ারেন্টানে যাবেন। ফলে হাসপাতালে ডাক্তার সংকট দেখা দিবে।
এদিকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে আজ বুধবার ( ২৯ এপ্রিল )
যশোরের ৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১টি নমুনায় কোভিড-১৯ পজেটিভ পাওয়া গেছে। তবে ঝিনাইদহের ৩৩টি,
নড়াইলের ৬টি ও মাগুরার ৯টি নমুনা পরীক্ষা করে সবগুলোর ফলাফলই নেগেটিভ এসেছে। অর্থাৎ গত ২৪ ঘণ্টায়
যবিপ্রবির ল্যাবে মোট ১১৩টি নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ১১টি পজিটিভ এবং ১০২টি নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।