চ্যানেল খুলনা ডেস্কঃতালায় সড়ক-মহাসড়কের কোল ঘেষে গড়ে উঠেছে হাজার, হাজার মৎস্য ঘের। সরকারী খাল, কালভার্ট’র মুখ বন্ধ করে অপরিকল্পিত মৎস্য ঘেরের চার পাশের সরকারী রাস্তা গুলোই ঘেরের ভেড়ীবাঁধ হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে দু’পাশের জলাশয়ের পানির চাপ সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জণগুরুত্বপূণ সড়ক গুলি ঘেরের পানিতে ধ্বসে পড়ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় একদিকে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাস্তা ধুয়ে যাচ্ছে ঘেরের পানিতে, অপর দিকে বর্ষার পানি সরতে না পারায় এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খুলনা-পাইকগাছা সড়কের গোনালী এলাকায় প্রায় ১শ’ ফুট রাস্তা ধ্বসে পড়েছে ঘেরের মধ্যে। এ ছাড়া ইসলামকাটি, খেশরা, মাগুরা, জালালপুর, খলিলনগর, তেঁতুলিয়া, কুমিরা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সংযোগ খালের পানি নিষ্কাষনের খালের মুখ এবং কালভার্ট’র মুখ বাঁধদিয়ে এলাকায় কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে ঘের মালিকেরা। চার পাশের সরকারী রাস্তা গুলোই ভেড়ীবাঁধ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কোন কোন ঘেরের পাশের রাস্তা ইচ্ছামত কেটে পাইপ বসাচ্ছে ঘের ব্যবসায়ীরা।
মৎস্য অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, তালা উপজেলায় ৭ হাজার হেক্টর এলাকা জুড়ে সাড়ে ৫ হাজারের বেশী মৎস্য ঘের রয়েছে। অধিকাংশ মৎস্য ঘেরের মধ্যে এবং তার আশ-পাশে থাকা পানি নিষ্কাষনের ড্রেন-খাল ও কালভার্ট বন্ধ করে অপরিকল্পিত ভেড়ীবাঁধ দেওয়ার কারণে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে ঘের এলাকার অধিকাংশ রাস্তা-ঘাট চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তেঁতুলিয়ার সোনা মেম্বর, দেওয়ানীপাড়ার আলতাফ মোড়ল, ভবানীপুরের মোসলেম উদ্দিন, কাজী ডাংগা গ্রামের জাকির হোসেন, খরাইলের জামাল খা আতাউর রহমান সহ অনেকের সাথে আলাপকালে জানাযায়, কেশবপুরের প্রভাবশালী ঘের ব্যবসায়ী জোর পূর্বক সরকারী খাল ও খাস জমি দখল করে ইচ্ছেমত বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছে।
তালা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নির্মল চন্দ্র ঘোষ জানান, উপজেলায় ৫ হাজার মৎস্য ঘের রয়েছে, তার মধ্যে শুধু যারা ঋন পেতে আগ্রহী, এমন হাতে গোনা ১২/১৩ জন ছাড়া অধিকাংশ ঘের ব্যবসায়ীর লাইসেন্স নাই। তালা উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মজিদ মোল্লা জানান, আলাদা ভেড়ীবাঁধ না থাকায় অধিকাংশ ঘেরের পাশের রাস্তা গুলি ধ্বসে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, জলাশয়ের পাশে রাস্তা কখনও টেকসই হয়না, সে কারণে আগামীতে আলাদা ভেড়ীবাঁধ না থাকলে আমরা জলাশয় বা ঘেরের পাশে রাস্তার কাজ হাতে নেব না।