খুলনার দাকোপে বিভিন্ন হাট বাজার ও এলাকায় ভাঙ্গাড়ি ব্যবসার আড়ালে চলছে ব্যাপক চোরাকারবারী। মাদকাশক্ত যুবকরা বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে এনে এই ভাঙ্গাড়ির দোকানে বিক্রি করছে। ফলে খুব সহজে মাদকের ভয়াবহ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছে এলাকার শত শত যুবক। এতে একদিকে এ চোরাকারবারী চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্যদিকে এলাকায় মাদক সেবনের সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাঝে মধ্যে চুরির ঘটনায় জড়িত দুই একজন চিহ্নিত ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে থানায় কয়েকটি মামলা হলেও থেমে নেই ওই রমরমা ব্যবসা।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদর চালনা বাজার, বটবুনিয়া বাজার, নলিয়ান বাজার, কালিনগর বাজার, বাজুয়া বাজারসহ বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বেশ কয়েকটি ভাঙ্গাড়ির দোকান রয়েছে। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ঘরভাড়া করে অথবা ছোট ঝুপড়ি ঘর তৈরী করে লাইন্সেস বিহীন এই ভাঙ্গাড়ি ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। বিভিন্ন পরিত্যক্ত জিনিস ক্রয়-বিক্রয়ের আড়ালে তারা চোর সিন্ডিকেট তৈরি করে চোরাই ব্যবসা শুরু করেছে। বিশেষ করে চালনা বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে অবস্থানরত কয়েকজন ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ী প্রত্যন্ত অঞ্চলের চোর সিন্ডিকেটের কাছে দাদন দিয়ে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
ওই চক্র গভীর রাতে নৌকা, ভ্যান ও পিকাপে টিন, পাষ্টিক, তার, পিতল, কাঁসা, নলকুপ, লোহার রড, টিন, ট্রান্সফরমার ও মোবাইল টাওয়ারের যন্ত্রাংশ, ব্যাটারী, সেচ মেশিন, মটর পাম্প, ব্রিজের রেলিংপাতিসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি করে দাদন নেওয়া ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে থাকে। ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ীরা রাতারাতি এসব চোরাই মালপত্র গোডাউনে সরিয়ে ফেলে। পরে সুযোগ মতো খুলনা, ঢাকা ও চট্টগ্রামে পাচার করে দেয়। সূত্র মতে একজন ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ী কমপক্ষে ১০ থেকে ৫০ ব্যক্তিকে দাদন স্বরূপ টাকা দিয়ে থাকে। ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ীরা দাদনের নামে অগ্রিম টাকা দিয়ে সাধারন ব্যবসায়ীদের চুরির কাজে সহয়তা করে আসছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। ওই সব অবৈধ ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকায় চোরসিন্ডিকেট চক্রের তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর কতিপয় ব্যবসায়ী এ চক্রকে কাজে লাগিয়ে রাতারাতি মোটা অংকের টাকার মালিক বনে যাচ্ছে।
চালনা বাজার লঞ্চঘাট এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা সাংবাদিক গোবিন্দ সাহা জানান, কয়েক মাস আগে দুই তিনটা ছেলে তিন চারটা ফ্যান চুরি করে এক ভাঙ্গাড়ির দোকানে বিক্রি করছিলো। এসময়ে আমি দেখে ফ্যানগুলো জব্দ করি এবং তাদের কাছ থেকে জানতে পারি ফ্যানগুলো হাসপাতালের। পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমল্পেক্সের কর্মকর্তা (টিএইচএ) ডাঃ সুদীপ বালাকে বিষয়টি জানালে তিনি এসে ফ্যানগুলো নিয়ে যান।
এবিষয়ে দাকোপ থানা পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) আব্দুল হক এ প্রতিবেদকে বলেন, কোন ভাঙ্গাড়ি ব্যবসায়ী চোরাই মাল ক্রয় করলে এবং তার প্রমান পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।