বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ এর ফলাফল নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে “ক্লাইমেট জাস্টিস অ্যালায়েন্স-বাংলাদেশ”। আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়, শিল্পোন্নত বিশ্বের চাপিয়ে দেওয়া নব্য উদারনৈতিক নীতি-কৌশলে জলবায়ু ন্যায্যতা অর্জন ব্যাহত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা কপ-২৯-এর কিছু অর্জনের কথা উল্লেখ করেন। তাঁদের মতে, ২০৩৫ সালের মধ্যে জলবায়ু অর্থায়নের নতুন লক্ষ্যমাত্রা (নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফাইড গোল- এনসিকিউজি) ৩০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করা এবং ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা একটি ইতিবাচক দিক। এছাড়াও, প্যারিস চুক্তির আর্টিকেল ৬ এর অধীনে কার্বন মার্কেটের নিয়মাবলী চূড়ান্ত করাকে তাঁরা অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করেন।
তবে, এই অর্জনগুলোর সাথে জোটের পক্ষ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সীমাবদ্ধতার কথা ও তুলে ধরা হয়। সংবাদ সম্মেলনের প্রধান বক্তা সিপিআরডি’র প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, “২০৩৫ সালের মধ্যে ৩০০ বিলিয়ন ডলারের এনসিকিউজি লক্ষ্য বর্তমান প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম এবং এর সময়সীমা অনেক দীর্ঘ।” তিনি আরও বলেন, “এটি অনুদান নাকি ঋণ হবে সে বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা নেই। শিল্পোন্নত বিশ্বকে তাদের ঐতিহাসিক দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার রাস্তা তৈরি হয়েছে।”
শামসুদ্দোহা কার্বন মার্কেটের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থায় জটিলতা এবং ‘গ্লোবাল স্টকটেক’ বাস্তবায়নে রাষ্ট্রসমূহের ব্যর্থতার কথা ও উল্লেখ করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, নব্য উদারনৈতিক নীতির কারণে জলবায়ু ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার পথ রুদ্ধ হচ্ছে।
কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনীষ কুমার আগরওয়াল জলবায়ু অর্থায়নে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর ন্যায্যতার বিষয়টি উল্লেখ করেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জিয়াউল হক কপ-২৯ থেকে আশাব্যঞ্জক ফলাফল না পাওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সূর্বণ বড়ুয়া জলবায়ু অর্থায়নে উন্নত বিশ্বের ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ তৈরির প্রবণতার সমালোচনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন দ্য ক্লাইমেট ওয়াচ এর নির্বাহী পরিচালক শামসুদ্দিন ইলিয়াস। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সিপিআরডি’র প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা। সিপিআরডি’র মো. শেখ নূর আতায়া রাব্বি এবং সানজিয়া সামস একটি যৌথ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।